‘খালেদা জিয়ার ইলেকশন-রাজনীতি নির্ভর করবে আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর’

ওবায়দুল কাদের
শুক্রবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মহসীন হলের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন ওবায়দুল কাদের। ছবি: সংগৃহীত

খালেদা জিয়ার রাজনীতি করা ও নির্বাচনে অংশ নেওয়া আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মহসীন হলের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন।

এ সময় তিনি বলেন, 'খালেদা জিয়া ইলেকশন করবেন, নাকি রাজনীতি করবেন তা নির্ভর করবে আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর। খালেদা জিয়ার রাজনীতি আইনি প্রক্রিয়ায় চলবে।'

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, 'মানবিক কারণে খালেদা জিয়া জেলের বাইরে আছেন, তার দণ্ড শেষ হয়নি। তার রাজনীতি ও নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত আদালতের ওপর নির্ভর করে। শেখ হাসিনা মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করেন। আর দেশের টাকা লুটপাট করায় জনগণ বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।'

'আওয়ামী লীগ বিলাসী জীবনযাপনের জন্য রাজনীতি করে' বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কোনো বিলাসী রাজনীতি করে না। পকেটের রাজনীতি করে বিএনপি।'

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। ডাকসু নির্বাচন প্রতিবছরই হয়। এটা করতে না পারা প্রশাসনেরই ব্যর্থতা। এতে আওয়ামী লীগের কোনো হস্তক্ষেপ নেই।' 

পুনর্মিলনী মঞ্চে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজকদের সমালোচনা করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, 'এই পরিবেশটাকে আমার কাছে অ্যালামনাইয়ের পরিবেশ বলে মনে হচ্ছে না। এখানে একটু স্মৃতিচারণ, কুশল বিনিময়, একটা আড্ডা থাকবে। এটা টিএসসিতেই ভালো মানায়। আপনারা বলেছিলেন, অনেক লোক আসবে। কিন্তু পেছনে তো সব খালি। একটা হলে আর কতজন আছে। সবাই তো ব্যস্ত। সবাই আসতে পারবেন, সেই নিশ্চয়তা নেই। এই কথাটা আপনাদের মনে থাকা উচিত ছিল।'

'নাম বলে বলে আপনারা অর্ধেক সময় নষ্ট করেছেন। আমাদের দেশে বিশেষ করে রাজনীতিতে সমস্যাটা হলো অনেক বেশি বিশেষণ। বক্তৃতার জন্য কাউকে পাঁচ মিনিট সময় দিলে পাঁচ মিনিটই চলে যায় বিশেষণে। বক্তৃতা করবেন কোন সময়! খুশি করা, তুষ্ট করার প্রবণতা বাদ দিন,' যোগ করেন তিনি।

অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনকে অরাজনৈতিক রাখার আহ্বান জানিয়ে কাদের বলেন, 'সব জায়গায় রাজনীতি করতে চাই না। কিছু জায়গা রাজনীতি থেকে বাইরে রাখতে হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলে আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রিত অনুষ্ঠান হবে, এটা অ্যালামনাইয়ের চরিত্র বা বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত নয়। এখানে বিভিন্ন দলের লোক ছিলেন। কিন্তু আপনি অ্যালামনাই করবেন এক দল দিয়ে, এটা হবে না। এই একটা জায়গা নন-পলিটিক্যাল রাখুন। সবাইকে দাওয়াত দিন। সবাই এসে কথা বলুক। কোনো চিফ গেস্ট বা মন্ত্রীর দরকার নেই। মন্ত্রী সবার মতো আবাসিক ছাত্র হিসেবে আসবেন। 
'অ্যালামনাইয়ে মন্ত্রীকে এনে প্রধান অতিথি করতে হবে, এর সঙ্গেও আমি একদমই একমত নই। এখানে আমি আসব মুহসীন হলের প্রাক্তন আবাসিক ছাত্র হিসেবে। সবাই আমরা প্রাক্তন। আমরা আড্ডা দেব, একসঙ্গে খাব, পুরোনো দিনের স্মৃতি রোমন্থন করব, হাসি-খুশিতে সময়টা কাটিয়ে দেব। এটা কোনো পলিটিক্যাল আসর নয়। এবার প্রথমবারের মতো হচ্ছে, পরবর্তী সময়ে যেন ঠিক থাকে,' বলেন তিনি।

অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডক্টর মো. নিজামুল হক ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর মো. আখতারুজ্জামান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দীন আহমেদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুসসহ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যবৃন্দ।
 

Comments