‘ডান্ডাবেড়ির কারণে মায়ের মরদেহ কবরে নামাতে না পারা অমানবিক’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ডান্ডাবেড়ির কারণে মায়ের মরদেহ কবরে নামাতে না পারা অমানবিক।
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বিএনপির কারাবন্দী নেতা আলী আজম খানের মায়ের মৃত্যুতে তার পরিবারের সদস্যদের খোঁজ নিতে গিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
আজ শুক্রবার দুপুরে উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি আলী আজম খানের বাড়িতে যান বিএনপির এ নেতা।
সেসময় আলী আজমের ছোট ভাই আতাউর রহমান বলেন, 'ভাই কারাগারে থাকায় এবং জামিন না হওয়ায় মা সাহেরা বেগম দুশ্চিন্তায় অসুস্থ হয়ে গত রোববার বিকেলে মারা যান। মিথ্যা মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে পুলিশ ভাইকে গ্রেপ্তার করে। তিনি ঘটনার সময় ওই স্থানে ছিলেন না। রাজনৈতিক জীবনে ভাইয়ের এটাই প্রথম জেলে যাওয়া। জানাজার দিন সকাল সোয়া ১০টার দিকে পুলিশ ভাইকে বাড়িতে নিয়ে আসে। আলী ভাই মায়ের জানাজায় ইমামতি করেন। নামাজ শেষে অল্প সময়ের মধ্যে মরদেহ কবরস্থানে নেওয়া হয়। ভাইয়ের হাতকড়া ও পায়ের ডান্ডাবেড়ি খুলে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলাম পুলিশকে। পুলিশ আমাদের কথা রাখেনি। মাটি দেওয়া শেষ না হওয়ায় পরিবারের পক্ষ থেকে ভাইকে আরেকটু সময় থাকার এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ চাইলেও দেওয়া হয়নি। পানি খেতে চাইলেও তাকে সে সুযোগও দেয়নি পুলিশ।'
তিনি আরও বলেন, 'আমার ভাই ২ সন্তানের জনক ও একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তার বড় মেয়ে অষ্টম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। ছেলে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। রাজনীতি করলেও পূর্বে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। শিশু সন্তান ও এলাকার মানুষের সামনে দাগী আসামিদের মতো ভাইকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে মারাত্মকভাবে হেয় করা হয়েছে।'
কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুল বলেন, 'বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজম খানকে পুলিশ যে মামলায় গ্রেপ্তার করেছে, ওই মামলায় তিনি এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন না। সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।'
এসময় বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল সালাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কাজী সায়েদুল আলম বাবুল, মজিবুর রহমান, গাজীপুর জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. সফিকুল ইসলাম আকন্দ, সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নানসহ দলের জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, মায়ের মৃত্যুতে মঙ্গলবার ৩ ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পান আলী আজম খান। হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় তিনি নিজেই মায়ের জানাজা পড়ান। ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা শুরু হয়।
Comments