১০ বছর পর চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে উদ্দীপনা
প্রায় ১০ বছর পর চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা ঘিরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। আগামী ৪ ডিসেম্বর পলো গ্রাউন্ডে এ সমাবেশ হওয়ার কথা আছে।
প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ উপলক্ষে সড়কের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। ফুটপাথ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও রং করা, রঙিন বাতি দিয়ে ফ্লাইওভার সাজানো এবং বিভিন্ন এলাকার ভাঙাচোরা রাস্তা মেরামতের কাজ চলছে।
গত রোববার সকালে লালখান বাজার এলাকায় ফুটপাথ রং করতে দেখা যায় সিটি করপোরেশনের কর্মীদের। উৎসাহী কয়েকজন সেখানে দাঁড়িয়ে কাজ পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তাদের একজন শাহাদাত হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে ফুটপাথ রং করা হচ্ছে দেখে তিনি খুশি।
তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শহরে যখন ভিভিআইপিদের কর্মসূচি থাকে, তখন চসিক সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ শুরু করে। এতে সুন্দর চেহারা ফিরে পায় রাস্তাগুলো।'
প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে ব্যানার ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে শহরের প্রধান রাস্তাগুলো। অধিকাংশ পোস্টার ও ব্যানার আওয়ামী লীগের আসন্ন কাউন্সিলে বিভিন্ন পদ প্রত্যাশী নেতাদের পক্ষ হতে সাঁটানো হয়েছে।
জামাল খান, কাজীর দেউড়ি, লালখান বাজার, টাইগার পাস, দেওয়ান হাট, কদমতলী, নিউমার্কেট, আন্দরকিল্লাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে প্রধানমন্ত্রীর সফরকে স্বাগত জানিয়ে পোস্টার ও ব্যানার দেখতে পান এই প্রতিবেদক।
চসিক সূত্র জানায়, সড়কে পোস্টার ও ব্যানার টাঙানোর জন্য কেউ সিটি করপোরেশনে আবেদন করেনি।
চসিক এর উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অনেক বছর পর নগরীতে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা অনুষ্ঠিত হবে, তাই, নগরীতে উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, 'পোস্টার ও ব্যানার এই উদ্দীপনারই অংশ। তবে এতে করে যেন পরিবেশের ক্ষতি না হয় সেজন্য আমরা সতর্ক আছি।'
তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশের পরদিন থেকে আমরা সব পোস্টার-ব্যানার অপসারণ শুরু করব।'
আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, ১০ বছর পর চট্টগ্রামে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, তাই, দলীয় নেতা-কর্মীরা ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। আর তারই অংশ হিসেবে এইসব ব্যানার-পোস্টার সাঁটানো হয়েছে।
আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, '২০১২ সালে চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ জনসভা হয়েছিল। তাই আমরা চাই ৪ ডিসেম্বরের জনসভাটি স্মরণীয় হয়ে থাকুক।'
তিনি আরও বলেন, জনসভায় ১০ লাখ লোক জমায়েত করার জন্য তারা সাংগঠনিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
পোস্টার ও ব্যানার সম্পর্কে জানতে চাইলে মফিজুর বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বড় দল এবং ব্যানার বা পোস্টার সাঁটানো বা টাঙাতে কোনো নেতা-কর্মীর জন্য দলের কোনো বাধা নেই। পোস্টার ও ব্যানারে প্রধানমন্ত্রীকে নগরে স্বাগত জানানো হচ্ছে। এটা প্রধানমন্ত্রীর চট্টগ্রাম সফরকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতা-কর্মীদের উচ্ছ্বাসের বহিঃপ্রকাশ।
তার মতে, 'যদি পোস্টার বা ব্যানারে কোনো বিতর্কিত লেখা না থাকে, তবে আমি মনে করি, এতে দোষের কিছু নেই।'
আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী ডেইলি স্টারকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী এই জনসভা থেকে নগরীর উন্নয়নের প্যাকেজ ঘোষণা করবেন। তাই দলের নেতা-কর্মীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষও সমাবেশকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহী।
'সমাবেশ সফল করতে আমরা ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছি,' যোগ করেন তিনি।
চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম এ লতিফ ডেইলি স্টারকে বলেন, সমাবেশের স্থানটি তার নির্বাচনী এলাকার একেবারে লাগোয়া। সাধারণ মানুষ এত বছর পর প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে এবং তার বক্তব্য শুনতে মুখিয়ে আছেন।
Comments