‘বিএনপি নেতাদের লজ্জা থাকলে পদ্মা সেতুতে ওঠার আগে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতেন’

হাছান মাহমুদ
হাছান মাহমুদ। ফাইল ছবি

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, পদ্মা সেতুর বিরুদ্ধে চরম অপপ্রচারকারী বিএনপি নেতাদের লজ্জা থাকলে তারা সেতুতে ওঠার আগে প্রধানমন্ত্রী ও জাতির কাছে ক্ষমা চাইতেন।

মিশরে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান শেষে আজ সোমবার সকালে দেশে ফিরেই দুপুরে সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন তিনি।

এ সময় সাংবাদিকরা 'বিএনপি নেতারা পদ্মা সেতু দিয়ে ফরিদপুরের সমাবেশে যাওয়া আসা করেছেন'এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এ কথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার সবার জন্যই পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে। কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবদের আসলে লজ্জা নেই। লজ্জা যদি থাকতো তাদের বলা উচিত ছিল- পদ্মা সেতুতে ওঠার আগে আমরা যে এ নিয়ে অপপ্রচার করেছি সেজন্য জাতির কাছে, জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। লজ্জা-শরম নেই তো, সে জন্য তারা চুপিসারে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যাওয়া আসা করেছেন।'

পদ্মা সেতু ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের তুলনামূলক খরচের হিসাবটা মন্ত্রী নিজে পার্লামেন্টে দিয়েছিলেন উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, খরচের তুলনামূলক হিসাবটা ধরা হয় স্বর্ণের মূল্য দিয়ে। কারণ টাকার মূল্যমান বা ডলারের মূল্যমান স্ট্যাটিক নয়, কিন্তু স্বর্ণের মূল্যমান স্ট্যাটিক। সেই হিসেবে, হার্ডিঞ্জ ব্রিজের তুলনায় পাঁচ ভাগের এক ভাগ টাকা খরচ হয়েছে পদ্মা সেতুতে।

বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, 'প্রথমত বিএনপি তো আজকে প্রায় ১৪ বছর ধরেই বলে আসছে সরকারের পতন ঘটাবে এবং পতন না ঘটিয়ে তারা ঘরে ফিরে যাবে না। অথচ প্রত্যেক সমাবেশ শেষে তারা ঘরেই ফিরে যায়। কারণ জনগণ তাদের কাছ থেকে সরে গেছে। তারা যতই আন্দোলন করছে, তাতে আমাদের একটা লাভ হচ্ছে- আমাদের কর্মীরা চাঙ্গা হচ্ছে এবং অপশক্তিকে মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।'

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের একটা গুণ হচ্ছে, কেউ যদি খোঁচা দেয় আওয়ামী লীগের কর্মীরা তখন ঐক্যবদ্ধ হয়, উজ্জীবিত হয়। সেটিরই বহিঃপ্রকাশ আপনারা দেখেছেন যে যুবলীগের সম্মেলনে লাখ লাখ যুবকের সমাবেশ হয়েছে। তাদের মতো এতো হাঁকডাক দেয়নি। আর এটি আওয়ামী লীগের নয়, যুবলীগের সমাবেশ, তাতেই লাখ লাখ যুবকের সমাবেশ ঘটেছে।

বিএনপি মহাসচিব সরকারের বিরুদ্ধে মেগা প্রকল্প থেকে বিধবা ভাতা পর্যন্ত চুরির অভিযোগ এনেছেন, এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী বলেন, 'বিএনপি পরপর পাঁচ বার বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল, চার বার এককভাবে আর একবার যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন। যারা বিশ্বচোর তারা সবকিছুতেই চুরির গন্ধ খোঁজে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন তো হাওয়া ভবন বানিয়ে সব ব্যবসায় টোল বসিয়ে চাঁদাবাজি করেছিল। মির্জা ফখরুল সাহেব কয়েক দিন আগে বলেছেন যে, সরকারের পতন হলে তারেক জিয়ার নেতৃত্বে জাতীয় সরকার হবে। অর্থাৎ হাওয়া ভবনের বিশ্বচোর আবার বাংলাদেশে আসবে এবং তার নেতৃত্বেই তারা জাতীয় সরকার গঠন করতে চায়। দেশের মানুষ এটা কখনো মেনে নেবে না।'

বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের ওপর আলোকপাত করতে গিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলো বলেছে গত বছর তারা জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলার আন্তর্জাতিক তহবিলে ৮২ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে। এর মধ্যে একটা বিরাট শুভংকরের ফাঁকি আছে। কারণ বিশ্ব জলবায়ু অর্থায়নের বিষয়ে প্যারিস চুক্তিতে স্পষ্ট লেখা আছে যে 'ইন এডিশন টু প্রেজেন্ট ওডিএ (ওভারসিজ ডিভালপমেন্ট এসিস্ট্যান্স)'। অর্থাৎ বর্তমানে উন্নত বিশ্ব যে ওভারসিজ ডিভালপমেন্ট এসিস্ট্যান্স দেয়, সেই অর্থ এই তহবিলে যুক্ত বলে গণ্য হবে না। জলবায়ু তহবিলে এর অতিরিক্ত অর্থ দিতে হবে। কিন্তু তারা বর্তমান ওডিএ'র অর্থায়নকেও যুক্ত করে গত বছর উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ৮২ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে বলে একটি হিসাব দাঁড় করিয়েছে। এর সাথে আমরা একমত নই।

এই বিষয়গুলোই সেখানে আলোচিত হচ্ছে এবং এখনো চলমান সম্মেলনের শেষের দিকেই ঐক্যমত বা সমঝোতা বা রোডম্যাপগুলো হয় জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, 'রাজনৈতিক কর্মসূচির জন্য আমি দেশে ফিরে এলেও সেখানে আমাদের পরিবেশমন্ত্রী আছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীও গতকাল গেছেন। তবে এবারকার সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের অংশগ্রহণে প্রমাণিত হয়েছে যে, উষ্ণায়নের হাত থেকে বিশ্বকে রক্ষা করার জন্য বিশ্বনেতারা গুরুত্ব দিচ্ছেন।'

Comments

The Daily Star  | English

Admin getting even heavier at the top

After the interim government took over, the number of officials in the upper echelon of the civil administration has become over three times the posts.

7h ago