আওয়ামী লীগ বিপদে সব সময় মানুষের পাশে থাকে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ায় না, তারা মৃত্যু দুর্যোগ দুর্বিপাকে উপহাস করে। আওয়ামী লীগ বিপদে সব সময় মানুষের পাশে থাকে।
তথ্যমন্ত্রী আজ রোববার বিকেলে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। তিনি করতোয়া নদীতে নৌকাডুবিতে নিহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অর্থ সহায়তা দেন।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলামের বাড়ি আর এই দুর্ঘটনার জায়গা আউলিয়াঘাট প্রায় এক ঘণ্টার পথ হলেও আসেননি। অথচ ঢাকায় বসে তারা নানান রকম কথা বলেন। আমরা যাওয়ার পর উনি আসবেন আমি জানি। আওয়ামী লীগ চলে এসেছে, বিএনপিকে আসতে হবে, এ জন্য আসবেন।
মন্ত্রী বলেন, অর্থ দিয়ে মানুষ হারানোর শোক মুছে দেওয়া যায় না। আমরা অসহায় মানুষগুলোর পাশে এসে দাঁড়িয়েছি। তাদের শোকে সামিল হয়েছি। এটা আওয়ামী লীগের আদর্শ। আওয়ামী লীগ এমন একটি দল যারা বিপদে সব সময় মানুষের পাশে থাকে।
আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নৌকাডুবিতে নিহত ৬৯ জন এবং নিখোঁজ ৩ জনের প্রত্যেকের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, শেখ 'হাসিনা মানবিক প্রধানমন্ত্রী। বিশ্ব গণমাধ্যম তাকে মানবতার মা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন এদেশের গরিব-দুঃখী মানুষের আস্থার প্রতীক। প্রধানমন্ত্রী বিদেশে থেকেও প্রতিনিয়ত নৌকাডুবিতে নিহতদের পরিবারের খোঁজ রাখছেন।
তিনি বলেন ১৯৯১ সালে চট্টগ্রামে যখন ঘূর্ণিঝড়ে ১ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল আমি তখন চট্টগ্রামে ছিলাম। কোন গাছে পাতা ছিল না, এমনকি নারিকেল গাছেও না। তখন আজকের প্রধানমন্ত্রী সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রী ছিলেন। তিনি সংসদে বলেছিলেন ঘূর্ণিঝড়ে লাখো মানুষ মারা গেছে।
তখনকার সংসদ নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন যত মানুষ মারা যাবার কথা ছিল ততো মারা যায়নি। তারা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ায় না। তারা মানুষের মৃত্যু, দুর্যোগ, দুর্বিপাকে উপহাস করে।
শেখ হাসিনা সেই দুর্যোগের পরপর-ই চট্রগ্রামে গিয়েছিলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আমি নিজে দেখেছি লাশের গন্ধে সকলে নাকে রুমাল দিয়েছে। কিন্তু তিনি রুমাল দিয়ে লাশের পাশে দাঁড়াননি।
এটাই হচ্ছে শেখ হাসিনা। এখানেই শেখ হাসিনার সাথে খালেদা জিয়ার পার্থক্য। এখানেই আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্যকার পার্থক্য।
আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল, আওয়ামী লীগ শুধু কথা বলে না, বিপদে আপদে মানুষের পাশে থাকে, মানুষের পাশে দাঁড়ায়।
নৌকাডুবির ঘটনা শোনার সাথে সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আজ আমরা নৌকাডুবির ঘটনায় নিহত, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে এসেছি। আমাদের নেতা-কর্মীরা এখানে এসেছেন। নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। বিএনপি নেতারা কি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল? পড়েনি। কিন্তু ভোট আসলে বিএনপি আসবে। ভোট আসার পরে বলবে পরীক্ষার খাতায় কি কি ভুল হয়েছে।
বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, ওদের পরীক্ষার খাতা তো সাদা, ওরা কি লিখবে? ওরা তো পরীক্ষাই দেয় না। আমরা তো চৌদ্দ বছর ধরে লিখছি, আরও এক বছর লিখব। লিখলে তো টুকটাক ভুল হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো দেশের মানুষের সঙ্গে ধোঁকাবাজি করেনি। এই সরকারের কাছে কোনো কিছু চাইতে হয় না। মানুষের প্রয়োজন অনুসারে সমস্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। নৌকাডুবির পর আমাদের কাজ হলো সেই মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানো। সেই কাজটি করতে সরকার এবং দল আপনাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।
করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাটে সেতু নির্মাণের উদ্যোগের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আশা করছি আগামী ডিসেম্বর বা জানুয়ারি মাসের মধ্যে এই নদীর উপর ওয়াই আকৃতির সেতু নির্মিত হবে। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। একনেকে অনুমোদন হয়েছে। বুয়েটের একটি প্রতিনিধি দল এই স্থান পরিদর্শনে আসছেন।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয় সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীর সভাপতিত্বে আর্থিক সহায়তা প্রদানকালে অন্যানের মধ্যে কেন্দ্রীয় জন্মাষ্ঠমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুকুমার রায় চৌধুরী, পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট, মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু আনছার মো. রেজাউল করিম শামিম বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাটে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়।
Comments