লালমনিরহাটে তিস্তা বিপৎসীমার ওপরে, কুড়িগ্রামেও বাড়ছে পানি

দেশের উত্তরের নদ-নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে আজ রোববার সকাল ৯টায় লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলের কারণে তিস্তার পানি হঠাৎ বেড়েছে। এদিকে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার ও ধরলা নদীর পানি দ্রুত বাড়লেও এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে তিস্তার চরাঞ্চল ও তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করায় স্থানীয়দের মধ্যে বন্যার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, 'আজ সকাল ৯টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার পাঁচ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে এবং দুপুর পর্যন্ত তা স্থিতিশীল ছিল। বৃষ্টি ও উজানের ঢল অব্যাহত থাকলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় পানির উচ্চতা আরও বাড়তে পারে। ফলে তিস্তাপাড়ের নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।'
একই ধরনের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান। তিনি বলেন, 'শনিবার মধ্যরাত থেকে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমারের পানি বাড়ছে। এই ধারা আগামী দুই-তিন দিন অব্যাহত থাকলে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে কুড়িগ্রামের নিম্নাঞ্চলে বন্যার সৃষ্টি হতে পারে।'
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী এলাকার কৃষক নেহার উদ্দিন (৬৫) জানান, 'আজ সকাল থেকে নদীর পানি ঢুকছে। এখনো ঘরে পানি ঢোকেনি, তবে অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে।'
আদিতমারী উপজেলার গোবর্ধন এলাকার কৃষক সহিদার রহমান (৬০) বলেন, 'বাড়ির উঠানে পানি উঠে গেছে। হাঁটাচলায় সমস্যা হচ্ছে, মানুষজন কষ্টে আছে।'
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মহিপুর চরের দিনমজুর জুলহাস মিয়া (৫০) বলেন, 'চরে পানি ঢুকেছে, ঘরের মধ্যেও পানি উঠছে। নদীর পানি আরেকটু বাড়লে আমাদের ঘর ছাড়তে হবে।'
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, 'বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। যেসব এলাকায় পানি ঢুকেছে, সেখানে শুকনো খাবার ও ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়েছে। উজান থেকে যেহেতু টানা ঢল আসছে, তাই সম্ভাব্য বন্যার ঝুঁকি বিবেচনায় আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা রেখেছি।'
Comments