চিলমারীতে অষ্টমীর স্নান উৎসবে লাখো পুণ্যার্থী

চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদে লাখো পুণ্যার্থীর ভিড়। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের 'অষ্টমী স্নান' উৎসবে লাখো পুণ্যার্থীর সমাগম ঘটেছে। শনিবার ভোর থেকে উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র তীরে স্নানের জন্য পুণ্যার্থীদের ঢল নামে। উপজেলা প্রশাসন রমনা ঘাট, বালাবাড়ী হাট, রানীগঞ্জ হাট ও ফকিরের হাট পয়েন্টে স্নানের ঘাট স্থাপন করেছে।

পাপ মোচন ও মনোকামনা পূরণের আশায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এই স্নানে অংশ নেন। প্রতি বছর চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথিতে এই স্নান উৎসবের আয়োজন করা হয়। পুণ্যার্থীরা বিশ্বাস করেন, এই তিথিতে ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করলে পাপ মোচন হয় এবং সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ পাওয়া যায়।

দেশের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি ভারত থেকেও অনেকে এই স্নান উৎসবে যোগ দিতে আসেন। তবে রংপুর বিভাগের আট জেলার পুণ্যার্থীদের সমাগম হয় সবচেয়ে বেশি।

রংপুরের পীরগাছার চৌধুরানী থেকে আসা রমেশ চন্দ্র দাস (৭০) ডেইলি স্টারকে বলেন, তিনি শৈশব থেকেই প্রতিবছর চিলমারীতে অষ্টমী স্নানে অংশ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, 'এই তিথিতে ব্রহ্মপুত্র নদের জলে স্নান করলে পাপ মোচন হয় বলে বিশ্বাস করি। স্নানের পর প্রশান্তি অনুভব করি।'

চিলমারীর পুণ্যার্থী নগেন্দ্র নাথ বর্মণ (৭৫) বলেন, 'বিশ্বাস করি, এই তিথিতে ব্রহ্মপুত্র নদের জলে স্নান করলে পাপ মোচন হয় ও শান্তি পাওয়া যায়।'

চিলমারী উপজেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি শচীন্দ্র নাথ বর্মণ ডেইলি স্টারকে বলেন, প্রতিবছর অষ্টমী স্নান উৎসবে প্রায় তিন লাখ পুণ্যার্থীর সমাগম হয়। এ বছরও ব্যতিক্রম হয়নি। দূরের পুণ্যার্থীরা অনেকে শুক্রবার রাতেই উৎসবস্থলে এসে রাত্রিযাপন করেছেন। শনিবার ভোর থেকে শুরু হয়ে স্নান উৎসব চলে দিনভর। তিনি আরও বলেন, অষ্টমী স্নান চিলমারীর প্রায় তিনশ বছরের ঐতিহ্য।

চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সবুজ কুমার বসাক বলেন, পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ ও নৌ পুলিশের পাশাপাশি দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করছেন।

Comments