নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে শর্টকোড চালুর সিদ্ধান্ত

অন্তর্বর্তী সরকার, হটলাইন সেবা, নারীর প্রতি সহিংসতা,

নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে পুলিশের হটলাইন সেবার পাশাপাশি শর্টকোড চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

আজ মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে পুলিশের হটলাইন সেবা চালুর পর থেকে ১৮ ঘণ্টায় ১০৩টি কল পুলিশের হটলাইনে রিসিভ করা হয়েছে। নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে পুলিশের হটলাইন সেবার পাশাপাশি শর্টকোড চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুলিশের ডিজিটাইজেশনে সরকারের চার উদ্যোগের মধ্যে এটি অন্যতম। 

প্রধান উপদেষ্টার ডাক টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, বাংলাদেশ পুলিশের সকল প্রকার পুলিশি কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ কমান্ড অ্যাপ তৈরির কাজ হাতে নিয়েছে সরকার। অভিযোগ ব্যবস্থাপনার জন্য ইন্সিডেন্টস ট্র্যাকিং সফটওয়্যার, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে শর্টকোড ও অনলাইনে সাধারণ ডায়েরি (জিডি), অনলাইনে কিংবা শর্টকোডের মাধ্যমে মামলা বা এফআইআর সহ বহুবিধ আধুনিকায়নের কাজও শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, 'বর্তমানে যে জাতীয় হেল্পলাইন আছে, তার সাথে আরেকটি ডিজিট যোগ করে চার ডিজিটের একটি নারী নির্যাতন বিষয়ক অভিযোগ জানাতে চালু করা হবে। কয়েকদিনের মধ্যেই এটি চালু হবে। নারীরা যেন নিঃসংকোচে অভিযোগ জানাতে পারেন, সে লক্ষ্যে কল সেন্টারে শতভাগ নারী সদস্যদের রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।'

তবে যেহেতু ৯৯৯ জীবন রক্ষাকারী এসওএস সেবা এবং এর কল সেন্টার ক্যাপাসিটি বৃদ্ধির প্রক্রিয়া সময় সাপেক্ষ, তাই আপাতত এই সেবাকে ৯৯৯ এ অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

এছাড়া অনলাইনে সাধারণ ডায়েরি করার পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আসছে। যুক্ত হচ্ছে অনলাইন এফআইআর পদ্ধতি। এক্ষেত্রে কল সেন্টারে প্রোফাইল ডাউনলোড হওয়ার পর কলটি সরাসরি সংশ্লিষ্ট থানায় চলে যাবে। বর্তমানে থানার দায়িত্বরতদের ফোন নম্বরের ডাটাবেজ নিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

তিনি জানান, উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সব ধরনের কারিগরি সহায়তা আইসিটি বিভাগ থেকে করা হবে। পুলিশের কমান্ড অ্যাপের প্রটোটাইপ তৈরির কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে অ্যাপ্লিকেশনটির আরও ডেভলপের কাজ চলমান।

'বর্তমানে পুলিশ সদস্যরা অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন। এতে অনেক সময় নষ্ট হয়। তাছাড়া তথ্য পাচারের ঝুঁকিও খুব বেশি, যে কোনো সদস্য আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করে সমস্ত আলোচনা কপি করে নিয়ে যেতে পারেন,' বলেন তিনি।

এ কারণে পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের পক্ষ থেকে 'পুশ টু টক' অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে, সেখানে তথ্য পাচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা থাকবে। বাহিনীর সদস্যদের নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে পুলিশ কমান্ড অ্যাপে কর্মকর্তাদের বেশ কয়েকটি স্তর থাকবে। টিয়ার-১ এ থাকবেন পুলিশের আইজিসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা। পরের স্তরে থাকবেন পুলিশ হেডকোয়ার্টার ও রেঞ্জ ডিআইজি, পুলিশ সুপারসহ জেলা পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তারা। সবশেষে থাকবেন দেশের সব থানার পুলিশ কর্মকর্তারা।

তবে থানা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের এখনই কমান্ড অ্যাপে সংযুক্ত করা হবে না বলে জানান তিনি।

'বর্তমানে যে কোনো অভিযোগ তদন্ত বা কোনো ঘটনা ঘটলে সব ধরনের যোগাযোগের ক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপ ও প্রচলিত অন্যান্য পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। পুলিশ কমান্ড সেন্টারের দায়িত্বে থাকা সদস্যরা সারাদিন এসব কাজেই ব্যস্ত থাকেন। এ ধরনের যোগাযোগের পুরো বিষয়টিকে একটি প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসতে মোবাইল কোম্পানিগুলোর কাস্টমার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আদলে একটি ইন্সিডেন্টস ট্র্যাকিং সিস্টেম তৈরি করা হচ্ছে,' বলেন তিনি।

এই ট্র্যাকিং সিস্টেমে সব ধরনের মেসেজ আদান-প্রদান ও যোগাযোগ সংরক্ষণ করা হবে। ফলে যে কোনো অপরাধের ঘটনায় কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেটি একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমেই জানা যাবে। ফলে, সেবা প্রদান সহজ ও সময় সাশ্রয়ের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের কাজের চাপও কমবে।

Comments

The Daily Star  | English

Why are onion prices rising abruptly?

Onion prices have been increasing over the past weeks, as farmers and traders release fewer stocks to local markets in the hope of better returns amid the government’s suspension of imports

2h ago