মুরগির খাঁচাও এর থেকে বড় হয়, আয়নাঘর পরিদর্শনের পর ড. ইউনূস

র‍্যাবের আয়নাঘরে ছোট ছোট খুপরির মতো ঘর দেখে একে মুরগির খাঁচার সঙ্গে তুলনা করেন প্রধান উপদেষ্টা। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

'যে খুপরির মধ্যে তাদেরকে রাখা হয়েছে, গ্রামে মুরগির খাঁচাও এর থেকে বড় হয়। তাদেরকে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর এভাবে বন্দি করে রাখা হয়েছে। মানুষ হিসেবে সামান্যতম মানবিক অধিকার থেকেও তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে।'

আজ বুধবার ঢাকার কচুখেতে ডিজিএফআই এবং উত্তরা ও আগারগাঁওয়ে র‍্যাবের আয়নাঘর পরিদর্শন শেষে অধ্যাপক ইউনূস এ কথা বলেন। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ভুক্তভোগী ও সাংবাদিকদের নিয়ে আয়নাঘর পরিদর্শন করেন তিনি।

আয়নাঘরে বেশ কয়েকটি খুপরি দেখা যায় যেখানে দিনের বেলাতেও আলো প্রবেশ করে না। নেই বাতাস চলাচলেরও কোনো ব্যবস্থা। এরকম একটি আয়নাঘর দেখে তাকে মুরগির খাঁচার সঙ্গে তুলনা করেন প্রধান উপদেষ্টা।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আয়নাঘর পরিদর্শন করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'গত সরকার আইয়ামে জাহেলিয়াত যুগের একটা নমুনা প্রতিষ্ঠা করে গেছে।'

তিনি বলেন, 'আমাকে নতুন করে বলতে হবে না। বর্ণনা দিতে গেলে বলতে হয়—আয়নাঘরের ভেতরে খুবই বীভৎস দৃশ্য। এখানে মনুষ্যত্ববোধের কিছু নেই। যা হয়েছে তা নৃশংস।'

আয়নাঘরে যে পরিবেশে মানুষকে আটকে রাখা হয়েছিল তা দেখে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, 'এটা কি আমাদেরই সমাজ? এটার কোনো ব্যাখ্যা নাই। যতটাই শুনি, অবিশ্বাস্য মনে হয়। যারা নিগৃহীত হয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে তারাও আমাদের সঙ্গে এসেছে, তাদের মুখেই শুনলাম। বিনা দোষে কতগুলো সাক্ষী নিয়ে, হাতে এক্সপ্লোসিভ ধরিয়ে দিয়ে কাউকে সন্ত্রাসী-জঙ্গি বলে রাখা হয়েছে।'

তিনি বলেন, 'এই রকম টর্চার সেল সারা বাংলাদেশ জুড়ে আছে সেটাও শুনলাম আজকে। কতগুলো আছে সেই সংখ্যা কিছু জানা আছে আর বাকিটা অজানা। গত সরকার আইয়ামে জাহিলিয়াত যুগের একটা নমুনা প্রতিষ্ঠা করে গেছে। গুম কমিশন এসে এসব উদঘাটন করেছে। দেশের যে চূড়ান্ত অবনতি দেখলাম এইটার তার একটা প্রতিচ্ছবি। মানুষকে সামান্যতম মানবিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল।'

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, 'এটা জাতির জন্য চূড়ান্ত রকমের ডকুমেন্ট হবে। ভুক্তভোগীদের সংখ্যা আমার জানামতে সতেরশ । অজানায় আরও আছে। এই যে মানুষ উধাও হয়ে গেছে, নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে, কেউ বলতে পারছে না সে কোথায়। এইগুলো করুণ দৃশ্য। আমরা এই সমাজকে যদি এর থেকে বের করে না আনতে পারি তাহলে আমাদের সমাজ তো টিকবে না। এইসব যারা করেছে তারা আমাদেরই সন্তান, ভাই। এটা আমাদের সবারই অপরাধ। মুক্ত বাংলাদেশে আমরা যেন নতুন করে বাংলাদেশ গড়তে পারি এবং যারা করেছে তাদের বিচার করতে পারি নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য।

'এইসব এভিডেন্স সিলগালা করে রাখা হবে। যাতে বিচারিক কাজে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যায়।' 

Comments

The Daily Star  | English

Eid meat: A day of sharing for some, a day of struggle for others

While the well-off fulfilled their religious duty by sacrificing cows and goats, crowds of people -- less fortunate and often overlooked -- stood patiently outside gates, waiting for a small share of meat they could take home to their families

1h ago