দেশে ২৩ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সম্পর্ক নেই: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ গত সাড়ে চার মাসে দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ২৩ জন হত্যার শিকার হয়েছেন বলে যে দাবি করেছে, তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

পুলিশের তদন্তে এই ঘটনার সঙ্গে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কোনো ধরনের সম্পর্ক পাওয়া যায়নি দাবি করে আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়েছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার কোনো ধরনের সংহিসতাকে সমর্থন করে না। অন্তর্বর্তী সরকার একইসঙ্গে এই ধরনের ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বলে প্রচারকে উদ্বেগজনক বলে মনে করে।

এই ধরনের বিভ্রান্তিমূলক প্রচরণা দেশের সার্বিক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের সূত্রপাত ঘটাতে পারে বিবেচনায় সব পক্ষকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সরকার।

প্রেস উইংয়ের ওই বার্তায় উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছে গণঅভ্যুত্থানের পর গত সাড়ে চার মাসে দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় ২৩ জন হত্যার শিকার হয়েছেন। তাদের এই দাবিকে অন্তর্বর্তী সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে ২৩ হত্যাকাণ্ডের তালিকা সংগ্রহ করে। ওই তালিকা প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পুলিশের কাছে পাঠিয়ে প্রতিটি ঘটনার প্রকৃত কারণ ও গৃহীত আইনি ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়।

পুলিশ সদর দপ্তর থেকে প্রতিটি ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়। এই ২৩ ঘটনার ২২টির প্রাথমিক কারণ সম্পর্কে পুলিশ অবগত হয়েছে এবং যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে একটি ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। যে ২২টি ঘটনার বিস্তারিত ইতোমধ্যে জানা গেছে, তার মধ্যে একটি ঘটনার সঙ্গেও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কোনো সম্পর্ক নেই।

বার্তায় আরও বলা হয়, হত্যাকাণ্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ সাতটির সঙ্গে চুরি ও দস্যুতার সম্পর্ক রয়েছে, চারটিতে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কলহের ঘটনা জড়িত, তিনটির ক্ষেত্রে জেনারেল ক্রাইম যেমন ধর্ষণ, অতিরিক্ত মদ পানে মৃত্যু এবং বিদ্রুপাত্মক মন্তব্য করা নিয়ে দুই পক্ষের মারামরি থেকে মৃত্যু, দুইটি দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু, দুইটি ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরে মৃত্যু, একটিতে স্থানীয়দের সংঘাতে মৃত্যু, একটি জমিজমার বিরোধ সংক্রান্ত ঘটনায় মৃত্যু, একটি আত্মহত্যার ঘটনা জড়িত। অপর একটি মৃত্যুর প্রকৃত কারণ এখনো না জানা গেলেও এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে যে সেখানে সাম্প্রদায়িক সংঘাতের কোনো বিষয় নেই।

এই তালিকায় এমন ব্যক্তিও রয়েছেন যিনি গত বছরের জানুয়ারিতে একটি ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ডিসেম্বরে হাসপাতালে মারা যান। এই প্রত্যেকটি ঘটনাকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে আইনি পদক্ষেপ ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে। এই ২৩ ঘটনার দুটোতে যেখানে আত্মহত্যা ও পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার ঘটনা রয়েছে, সেই দুটির তদন্ত শেষে পুলিশ ইতোমধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে।

অপর ২১টি তদন্তাধীন মামলায় ইতোমধ্যে ৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ১৭ জন নিজেদের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Teacher candidates: Water cannons, batons used to disperse protesters

Despite police action, many protesters gathered near the High Court around 4:35pm

44m ago