এত মানুষ জীবন দিয়েছে শুধু একটি নির্বাচনের জন্য নয়: সারজিস আলম

মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর কবরে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন সারজিসসহ অন্যান্যরা। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, দুই হাজার মানুষ পরিবারের কথা চিন্তা না করে, মা-বাবার কথা চিন্তা না করে, সহধর্মিণীর কথা চিন্তা না করে, সন্তানের কথা চিন্তা না করে জীবন দিয়েছে শুধুমাত্র একটি নির্বাচনের জন্য না।

রোববার রাতে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার কবরে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। 

সারজিস আলম বলেন, শুধুমাত্র একটি নির্বাচনের জন্য যদি এমন কিছু হতো, তাহলে বিগত ১৬ বছরে এই শুধুমাত্র নির্বাচনের জন্য সব মানুষ একসঙ্গে রাজপথে নেমে যেত। এত মানুষ একসঙ্গে নেমেছে যখন খুনি শেখ হাসিনার করাপটেড প্রত্যেকটি সিস্টেম ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল এবং মানুষ প্রত্যেকটি জায়গায় গিয়ে নিজের সাধারণ মৌলিক অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। প্রত্যেকটি সাধারণ মানুষ যখন সাধারণ একটি সেবা পেতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাচ্ছিল, মানুষকে টাকা দিতে হতো, সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হতে হতো, তখন এই সামগ্রিক সিস্টেমগুলোর বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমেছিল। তাহলে এই অভ্যুত্থানের একটি ন্যূনতম চাহিদা হচ্ছে ওই ধ্বংস হওয়া সিস্টেমগুলোর মিনিমাম একটি সংস্কার করা।

তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশের যেকোনো রাজনৈতিক দল যদি তাদের জায়গা থেকে মনে করে এই ধ্বংস হওয়া নির্বাচন ব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থাসহ বাংলাদেশের অন্যান্য যে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থাগুলো রয়েছে, এগুলো ছয় মাসে সংস্কার করা সম্ভব, তাহলে আমরা আমাদের জায়গা থেকে মনে করি যে, তারা অবশ্যই এখনো তাদের যে বিবেক বোধের জায়গাটুকু, সেটুকু যতটুকু বহিঃপ্রকাশ প্রত্যাশা করি, ততটুকু তারা করছেন না। এটুকু তারা তাদের জায়গা থেকে করেনি বলেই ১৬ বছরে যে সমাধানটি রাজনৈতিকভাবে হওয়া দরকার ছিল, যে খুনি হাসিনার পতন রাজনৈতিকভাবে হওয়া দরকার ছিল, সেই খুনি হাসিনার পতন হয়েছে ছাত্র-জনতার এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।

সারজিস বলেন, আমরা আমাদের এই জায়গা থেকে মনে করি, আমরা এই অন্তর্বর্তী সরকারকে তিন, চার বা পাঁচ বছরও ক্ষমতায় থাকার কথা বলছি না। কিন্তু কেউ যদি বলে ছয় মাস—এর মতো অযৌক্তিক কোনো কথা আর হতে পারে না। একটি নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য শুধু কি একটি নির্বাচন কমিশন দরকার? এই নির্বাচনব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে একটি স্বচ্ছ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দরকার, যে তার দায়িত্বগুলো ঠিকমতো পালন করবে। সেই জায়গায় যদি কোনো অপকর্ম হয়, কেউ যদি ক্ষমতার অপব্যবহার করে, তাদেরকে বিচারের আওতায় আনার জন্য একটি বিচারব্যবস্থা দরকার এবং এই সামগ্রিক বিষয়গুলোর জন্য... আমার দেশের মানুষ এখন দ্রব্যমূল্যর কারণে বাজারে গেলে ঠিকমতো কেনাকাটা করতে পারে না, সিন্ডিকেটগুলোর হাতবদল হয়েছে, সিন্ডিকেটের মধ্যে নিজেদের দলে দলে এখন নেগোসিয়েশন করে এই কালপ্রিটগুলোকে উত্থান না করে, মানুষের মধ্যে ঠিকমতো বাজার করার যে ক্ষমতা সেটি তৈরি না করে কীভাবে নির্বাচনের গল্প নেই।

'আমরা আমাদের জায়গা থেকে মনে করি, অবশ্যই ছয় মাস যেমন সম্পূর্ণ অযৌক্তিক একটি সময়, আবার তিন, চার বা পাঁচ বছরও দীর্ঘমেয়াদি সময়। আমরা চাই নির্দিষ্ট একটি যৌক্তিক সময়ে এই সিস্টেমগুলো একেকটি আস্থাযোগ্য সংস্কার হোক। এর পরবর্তীতে অবশ্যই সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার ক্ষমতায় আসুক', বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Teknaf customs in limbo as 19 mt of rice, authorised by AA, reaches port

The consignment of rice weighing 19 metric tonnes arrived at Teknaf land port on Tuesday evening with the documents sealed and signed by the Arakan Army

3h ago