চট্টগ্রামের ডিমের বাজার: দিনে অভিযানের সময় বন্ধ আড়ত, বেচাকেনা চলে রাতে
চট্টগ্রামে ডিমের পাইকারি বাজারে চলছে ইঁদুর-বিড়াল খেলা। দিনের বেলায় ভোক্তা অধিকারের অভিযান চলে। এ কারণে কৌশল পাল্টেছে আড়তদাররা।
দিনে বেচাকেনা দেখা না গেলেও, রাত বাড়ার সঙ্গে পাহাড়তলী ডিমের আড়তে শুরু হয় বিক্রি।
জানা গেছে, সরকার নির্ধারিত মূল্যে ডিম বিক্রির বাধ্যবাধকতা, ভোক্তা অধিকারের একের পর এক অভিযানে চাপে পড়েছেন চট্টগ্রামের পাইকারি ডিম বিক্রেতারা।
আড়তদাররা দলবদ্ধভাবে ঘোষণা দিয়ে চট্টগ্রামে বন্ধ রেখেছেন পাইকারি পর্যায়ে ডিম বিক্রি। অথচ তাদের আড়তের ভেতরে লাখ লাখ ডিম। বাইরের গেট তালা বন্ধ।
তবে বেশি দামে ও রশিদ ছাড়া যারা ডিম কিনতে রাজি তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে পাহাড়তলীর ডিমের আড়তে।
ক্রেতাদের অভিযোগ, চট্টগ্রামের অল্প কয়েকজন আড়তদার বাজারে ডিমের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে প্রতিটি ডিমে ১ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ২ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি করে বাজার থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সকাল থেকে ডিমের আড়ত বন্ধ রাখার ঘোষণা দিলেও চট্টগ্রামের প্রভাবশালী এক আড়তদার রাতের আঁধারে আড়তের গেট বন্ধ রেখে ভেতরে বেচাকেনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তবে তিনি সরকারি দামে বিক্রি না করে বাড়তি দামে ডিম বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ কয়েকজন ব্যবসায়ীর।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, পাহাড়তলী বাজারে ডিমের আড়তগুলোর ভেতরে ডিম মজুত করা আছে। তারা ডিমের বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন।
যোগাযোগ করা হলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক ফয়জ উল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চট্টগ্রামের আড়তদাররা সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি করছে না। অভিযান চালিয়েও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না পাইকারি বাজার। চট্টগ্রামের একাধিক আড়তদারকে জরিমানাও করা হয়েছে। এখন তারা কৌশল পাল্টেছে। দিনের বেলায় আড়ত বন্ধ রেখে রাতে চলে বেচাকেনা।'
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাহাড়তলী ডিম আড়তদার সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল শুক্কুর লিটন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরকারি দামে ডিম কিনতে না পারা, রশিদ না দেওয়া, ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জরিমানার কারণে ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছেন আড়তদাররা।'
তিনি আরও বলেন, 'সোমবার আমাদের ডিম কিনতে হয়েছে ১২ টাকা ৮০ পয়সায়। সরকার নির্ধারিত দাম ১১ টাকা ০১ পয়সা। এছাড়া যাদের কাছ থেকে আমরা ডিম কিনছি তারা রশিদ দিচ্ছে না। হয়রানি থেকে বাঁচতে ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছি। সরকারি দামে কিনতে পারলে তখন আড়তে ডিম বেচব।'
Comments