ভরা মৌসুমেও চাঁদপুর মাছঘাট ছোট ইলিশে ভরপুর
ইলিশের মৌসুম প্রায় শেষ পর্যায়ে। আর ১২ দিন পর শুরু হবে মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান। এমন সময় চাঁদপুর মাছঘাটে বড় বড় ইলিশ থাকার কথা।
কিন্তু রোববার দুপুরে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ছোট ছোট ইলিশে পুরো বাজার ভরপুর। আকারে ছোট হলেও এসব ইলিশেরই প্রচুর কেনাবেচা চলছে। স্থানীয় বাজার ছাড়াও সারাদেশে অফলাইন-অনলাইন ও আড়তদারদের মাধ্যমে বাক্সবন্দি করে ক্রেতাদের পাঠানো হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানান, এসব ছোট ইলিশ চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা ছাড়াও নোয়াখালীর হাতিয়া-ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চল থেকেও জেলেরা ধরে আনছেন। ২০০ থেকে ৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশই সেখানে বেশি।
সরেজমিনে দেখা যায়, এসব ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৭ থেকে ২৫ হাজার টাকা মণ দরে। আড়তে ছোট ইলিশের পাশাপাশি কিছু বড় আকারের ইলিশও দেখা গেছে। এর মধ্যে নোয়াখালী-হাতিয়াসহ দক্ষিণাঞ্চলের কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৬০০ টাকা দরে। আর চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম দুই হাজার টাকা।
সুপ্রিম কোর্ট ইলিশের কেজি ৭০০ টাকা করার নোটিশ দিলেও এর বাস্তবায়ন দেখা যায়নি।
ইলিশের পাইকারি বিক্রেতা দেলু মিজি বলেন, রোববার ১০০ মণ ছোট ইলিশ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়েছি। তিন থেকে চারটা মাছের ওজন এক কেজি, যার দাম প্রতি মণ ২৪ থেকে ২৫ হাজার টাকা।
মাছঘাটের আড়তদার ও মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শবেবরাত বলেন, এ সময় ছোট ইলিশ থাকার কথা না। কারণ আর ১২ দিন পর মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের অভিযান শুরু হবে। তখন চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে কোনো ধরনের মাছ ধরা যাবে না। কিন্তু প্রতিদিন বাজারে ভালো পরিমাণ ছোট ইলিশ দেখা যাচ্ছে। এসব মাছের পেটে ডিমও নেই। এতে আমরা সামনের এই অভিযান নিয়ে চিন্তিত।
চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আমিরুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রতি বছর মা ইলিশ নিয়ে গবেষণা করে থাকি যে, কখন-কোথায় তারা ডিম দেয়, কোথায়-কখন বড় হয়। তার ওপর নির্ভর করে এ বছরও আগামী ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন মা ইলিশ রক্ষায় নদীতে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছি।
'বাজারে থাকা ছোট ইলিশের বিষয়ে বলব, নদীতে সব ধরনের ইলিশই আছে। তা ছাড়া অনেক জেলে কারেন্ট জাল ব্যবহার করায় এসব ছোট মাছ ধরা পড়ছে বলে মনে করি। এখন তো কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তারপরও আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি', বলেন তিনি।
Comments