শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় আজ বন্ধ ২২ কারখানা
শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় বন্ধ থাকা পোশাক কারখানা খুলে দেওয়া, শ্রমিকদের নামে মামলা প্রত্যাহার ও নূন্যতম মজুরি বৃদ্ধি করে ২২ হাজার টাকা করার দাবিতে আবারও শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
শ্রমিকরা কোথাও কোথাও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। শ্রমিক অসন্তোষের মুখে আজ শনিবার বন্ধ রয়েছে অন্তত ২২টি কারখানা।
সকালে আশুলিয়ার বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের জিরাবো এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। এদিকে বিক্ষোভের এক পর্যায়ে শ্রমিকরা আশেপাশের বিভিন্ন কারখানার সামনে গিয়ে শ্রমিকদের ডাকাডাকি করে ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এসময় অন্যান্য কারখানার শ্রমিকদের বের করে নিয়ে এলে ওই অঞ্চলের অন্তত ৮ থেকে ১০টি কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের কারখানা ছুটি ঘোষণা করেন।
লুসাকা গ্রুপের শ্রমিকরা বলেন, গত ৯ সেপ্টেম্বর মালিকপক্ষ কারখানার ২৭ জন শ্রমিকের নামে এবং অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে আশুলিয়া থানায় মামলা করে। পরে এই মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে শ্রমিকরা আন্দোলন করলে গত বৃহস্পতিবার কারখানা খুলে দেওয়ার পর মালিকপক্ষ জানায় তারা আমাদের কাছে মামলা প্রত্যাহার করে কপি হাতে হাতে দিয়ে দেবে। কিন্তু পরবর্তীতে আর তা দেয়নি। আজ সকালে কারখানায় এসে দেখি মালিকপক্ষ শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে। পরে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে আশেপাশের কয়েকটি কারখানার শ্রমিকদের বের করে নিয়ে এসে সড়কে অবস্থান নিয়ে শ্রমিকদের নামে মামলা প্রত্যাহার এবং বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে।
শিল্প পুলিশ বলছে, সকালে লুসাকা গ্রুপের শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করার পর জিরাবো এলাকার মন্ডল নিটওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকরাও সড়কে নেমে এসে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করে। মন্ডল গ্রুপের শ্রমিকরা কয়েকদিন ধরে বেতন বৃদ্ধি করে ২২ হাজার টাকা করার দাবিতে আন্দোলন করছিল। এদের সাথে আরও কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা যুক্ত হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আন্দোলনরত মন্ডল নিটওয়্যার লিমিটেডের এক শ্রমিক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বেতন বৃদ্ধিসহ কয়েকটি দাবিতে আমরা আন্দোলন করছিলাম। আজ কারখানায় এসে দেখি মালিকপক্ষ ১৩(১) ধারায় কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে। এছাড়াও গত বৃহস্পতিবার থেকে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা মালিকপক্ষের হয়ে আমাদের শ্রমিকদের মারধর করছে। আমাদের বিভিন্ন শ্রমিকদের ধরে ধরে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে আমরা আন্দোলন করছি।'
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সকাল থেকে শিল্পাঞ্চলের অধিকাংশ কারখানা খোলা রয়েছে এবং শ্রমিকরাও শান্তিপূর্ণভাবে কাজে যোগ দিয়েছেন। পরে লুসাকা গ্রুপের শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করলে আশেপাশের ৮ থেকে ১০টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে। এছাড়াও মন্ডল গ্রুপের শ্রমিকরা নূন্যতম মজুরি ২২ হাজার টাকা করার দাবিতে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছে। শ্রম আইনের ১৩/১ ধারায় ১০টি কারখানাসহ মোট ২২টি কারখানা বন্ধ রয়েছে৷ এছাড়া কিছু কিছু কারখানায় আধা বেলা কাজ করে ছুটি দেয়া হয়েছে। এখন সড়ক স্বাভাবিক রয়েছে। শ্রমিকরা বাসায় ফিরে গেছে।
Comments