‘পরিবার সামলাতেই হিমশিম খাচ্ছি, চিকিৎসা চালাবো কী দিয়ে’

‘পরিবার সামলাতেই হিমশিম খাচ্ছি, চিকিৎসা চালাবো কী দিয়ে’
রাজন | ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালী সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম শারিকখালী গ্রামের মকবুল হাওলাদারের ছেলে রাজন। ঢাকার মহাখালী এলাকায় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের ব্যবসা করতেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশের একটি ছররা গুলি তার ডান চোখের মনিতে আঘাত করে।

স্থানীয়রা তাকে আয়েশা মেমোরিয়াল স্পেশালাইজড হসপিটালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। সেখানে তিন দিন চিকিৎসার নেওয়ার পর পাঠানো হয় ঢাকার হাইটেক মাল্টিকেয়ার হাসপাতালে।

পরবর্তীতে আন্দোলনে আহতদের সু-চিকিৎসার্থে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) খুলে দিলে রাজন সেখানে চিকিৎসা নেন।

বর্তমানে তিনি সিএমএইচের চিকিৎসক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ডা. রিনা আক্তারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। নির্দিষ্ট সময় পরপর তাকে সিএমএইচে যেতে হয়। সর্বশেষ গত ২ সেপ্টেম্বর চিকিৎসা নিয়ে চার সদস্যের পরিবারসহ গ্রামের বাড়িতে চলে এসেছেন।

রাজন জানান, সিএমএইচসহ ঢাকার কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেও এখনো সুস্থ হতে পারেননি। চোখ পুরোপুরি ঠিক হবে কিনা সে ব্যাপারে এখনো আশ্বস্ত করতে পারেননি চিকিৎসকরা।

তিন ভাইয়ের মধ্যে রাজন বড়। পড়ালেখা বেশিদূর আগাতে পারেননি। সংসারের হাল ধরেছিলেন। রাজনের এমন দশায় বন্ধ হয়ে গেছে পরিবারের আয়ের উৎস। দৃষ্টিশক্তি হারানোর শঙ্কায় রাজন এখন দিশেহারা।

রাজন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার ডান চোখের মণিতে একটি ছররা গুলি লেগে বেরিয়ে গেছে। আমি বর্তমানে চোখে ঝাপসা দেখছি। সবসময় ব্যথা করে। দিনের আলোতে চলতে কষ্ট হয়। চিকিৎসকরা জানান, ছয় মাস পর বলতে পারবেন চোখ পুরোপুরি ঠিক হবে কিনা।'

'স্ত্রী, দুই সন্তান নিয়ে ভালোই ছিলাম। আন্দোলনে গিয়ে আহত হয়ে বেকার হয়ে পড়েছি। পরিবার সামলাতেই হিমশিম খাচ্ছি, চিকিৎসা চালাবো কী দিয়ে', বলেন তিনি।

রাজন জানান, হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিলেও ঢাকায় থেকে চিকিৎসা নেওয়ার কিংবা ঢাকায় আসা-যাওয়ার খরচের ব্যবস্থা তার নেই। সরকারি-বেসরকারি কোনো অর্থ সাহায্যও পাননি।

তিনি বলেন, 'একদিকে পরিবারের ভরণপোষণ, অপরদিকে চোখের দৃষ্টিশক্তি হারানোর শঙ্কায় আমি এখন দিশেহারা।'

দুর্বিষহ এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তা কামনা করেছেন রাজন। তাকে সহায়তার জন্য ০১৭৪৫-৬৪৬৬৬৮ নম্বরে যোগাযোগেরও অনুরোধ জানিয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Fishermen lost at sea: Authorities install plaque while families await aid

At least 188 fishermen have gone missing in the past three decades in Barguna's Patharghata upazila

1h ago