যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় ইবি শিক্ষক কারাগারে

ড. সঞ্জয় কুমার সরকার। ছবি: সংগৃহীত

যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি ড. সঞ্জয় কুমার সরকার।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের (জেলা ও দায়রা জজ) বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম ওই শিক্ষককে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

নাটোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (বিশেষ পিপি) অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আনিসুর রহমান জানান, জয়া সাহা অভিযোগে বলেছেন তার স্বামী সঞ্জয় কুমার যৌতুকের দাবিতে তাকে মারধর করতেন। এই অভিযোগের তদন্ত করেন একজন ম্যাজিস্ট্রেট। তদন্ত রিপোর্ট বাদীর পক্ষে যায়। পরে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। পরে আসামি মীমাংসার শর্তে আদালত থেকে অস্থায়ী জামিন নেন। মীমাংসা না হওয়ায় আসামি আদালতে হাজিরা দেন। বিচারক শুনানি শেষে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে ৪ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস কর্নারে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেন জয়া সাহা। পরে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, প্রক্টর ও রেজিস্ট্রার দপ্তরে লিখিত অভিযোগও দেন তিনি।

জয়া নাটোরের উপরবাজার উপজেলার রতন কুমার সাহার বড় কন্যা। সঞ্জয় কুমার পাবনা জেলার চড়াডাঙ্গা গ্রামের সুশান্ত কুমার সাহার পুত্র। ২০১৫ সালে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। এই দম্পতির পাঁচ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জয়া সাহা বলেন, বিয়ের পর থেকেই সঞ্জয় কথায়, কাজে, আচরণে আমাকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেছে। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এসব নির্যাতন মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায়। স্যান্ডেল, বেল্ট, ঝাঁটা, খুন্তি, বেলনা থেকে শুরু করে হাতের কাছে যখন যা পেতো তাই দিয়েই মারধর করত। সে আমাকে মারতে মারতে বলত, 'তুই বাপের বাড়ি যাস না কেন? বাঁচতে চাইলে বাপের কাছ থেকে ট্যাকা নিয়ে আয়।' অনেক সময় মারতে মারতে অসুস্থ হয়ে পড়লে বাবার বাড়ি নাটোরে রেখে আসত।

জয়া বলেন, সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৪ জুন সঞ্জয় আমাকে বাবার বাড়িতে যাওয়ার জন্য শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। সে আমাকে ও ছেলেকে নাটোর রেখে যায়। দীর্ঘদিন না নিয়ে যাওয়ায় আমি নিজে ও আমার বাবা-মা সঞ্জয়সহ তার বাবা মা ও আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। কোনো লাভ হয়নি। পরবর্তীতে সে সাফ জানিয়ে দেয়, এই মুহূর্তে তার ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। টাকা দিলে নিয়ে যাবে, নচেৎ না। পরে এ নিয়ে আমি আদালতে মামলা দায়ের করি।

২০১৮ সালে সঞ্জয় কুমারের বিরুদ্ধে তারই বিভাগের এক ছাত্রীকে নিপীড়ন ও হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠে। এ নিয়ে ওই ছাত্রীর বাবা অভিযোগ করলে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। যদিও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ওই ছাত্রী মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।

Comments

The Daily Star  | English
Anti-Discrimination Students Movement

Students to launch political party by next February

Anti-Discrimination Student Movement and Jatiya Nagorik Committee will jointly lead the process

10h ago