ফুলপরীকে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করা মোবাইল ফোন জব্দে পুলিশকে চিঠি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে হলের গণরুমে নির্যাতন চালানোর সময় মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেছিলে ছাত্রলীগের নেত্রীরা। ঘটনার পর প্রায় একমাস পেরিয়ে গেলেও মোবাইল ফোনটি জব্দ হয়নি। হাইকোর্টের নির্দেশে এখন সেই মোবাইল ফোনটি জব্দ করতে পুলিশকে চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান জানিয়েছেন হাইকোর্টের নির্দেশনার পূর্ণাঙ্গ কপি পাওয়ার পর আজ বৃহস্পতিবার পুলিশকে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠি পাওয়ার কথা জানিয়ে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আন নূর যায়েদ বলেন, মোবাইল ফোনটি জব্দ করার চেষ্টা চলছে।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ও হাইকোর্টের নির্দেশনার পূণার্ঙ্গ নথি হাতে পেতে যতটুকু সময় লেগেছে তার আলোকেই চিঠি দেওয়া হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার ফুলপরী খাতুনের অভিযোগ ছিল, গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে তাকে সাড়ে চার ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন চালায় ইবি শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, তাবাসসুমসহ আরও কয়েকজন। হালিমা খাতুন উর্মি নামের একজন নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করেন। নির্যাতনের কথা প্রকাশ করলে ছাত্রলীগ নেত্রীরা তাকে হত্যার হুমকি দেন।
কিন্তু তদন্ত কমিটির কাছে অভিযুক্ত হালিমা খাতুন উর্মি দাবি করেছেন, তার মোবাইল ফোনটি হারিয়ে গেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মোবাইল ফোনটি উদ্ধারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনাটি গত ১৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের নজরে আনেন দুজন আইনজীবী। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা জনস্বার্থে রিট করেন। রিটের শুনানি শেষে ১৬ ফেব্রুয়ারি একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও একজন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তার সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া অভিযুক্তদের ক্যাম্পাসের বাইরে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরই মধ্যে গত ১৮, ২০ ও ২২ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন কমিটির ডাকে মোট তিনবার পৃথকভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ক্যাম্পাসে এসে সাক্ষাৎকার দেন ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তরা।
ঘটনা তদন্তে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরে ছাত্রলীগও একটি তদন্ত কমিটি করার কথা জানায়।
হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ৪ মার্চ নির্যাতনের অভিযোগে ছাত্রলীগ সহ-সভাপতিসহ পাঁচ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
Comments