এখনো পানির নিচে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, ফেনী অংশে ৫০ কিমি দীর্ঘ যানজট
এখনও বন্যার পানির নিচে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী অঞ্চল। এতে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে সড়কে যান চলাচল।
গত তিন দিন ধরে ফলে চট্টগ্রাম ও ঢাকার উভয় দিক থেকে যানবাহন চলাচল আংশিকভাবে বন্ধ রয়েছে।
পুলিশ ও সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ফেনীর লালপোল এলাকায় মহাসড়কের প্রায় পাঁচ থেকে ছয় কিলোমিটার অংশ এখনও পানির নিচে, যার কারণে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রাম এবং ঢাকার দুই প্রান্তেই। এতে যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহনগুলো রাস্তায় আটকা পড়ে দুভোর্গের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ঢাকা থেকে যারা বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ দিতে যাচ্ছিলেন তারাও বিপাকে পড়েছেন।
কয়েকজন গাড়ি চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আকস্মিক বন্যার কারণে ফেনী অঞ্চলের মহাসড়ক ডুবে যাওয়ার পর থেকে তারা গত তিন দিন ধরে সেখানে আটকা পড়ে আছেন। ট্রাক, মিনি ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, পিকআপ, বাস, মাইক্রোবাস, জিপ এবং ব্যক্তিগত গাড়ি মহাসড়কে স্থবির হয়ে আছে।
কুমিল্লা অঞ্চলের হাইওয়ে পুলিশের সুপারিনটেনডেন্ট খায়রুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মহাসড়কে বন্যার পানি জমে থাকার কারণে, গত তিন দিন ধরে যানবাহনগুলো স্থবির হয়ে আছে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে চট্টগ্রামের দিকে এবং মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাট পয়েন্ট থেকে ঢাকামুখী উভয় দিকেই ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজট সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে যানবাহনগুলো ধীরগতিতে চলছে।'
'ঢাকা ও চট্টগ্রামগামী যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন, কারণ তারা বন্যার পানির মধ্য দিয়ে তিন থেকে চার কিলোমিটার পথ ব্যাগ ও মালামাল নিয়ে হাঁটতে বাধ্য হচ্ছেন। আমরা গত দুই দিন ধরে মাঠে কাজ করছি এবং অন্যান্য সংস্থার সাথে সমন্বয় করে রাস্তা চেষ্টা করছি, কিন্তু বন্যার পানি আমাদের প্রচেষ্টায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কারন পানিতে যানবাহন চলতে পারছে না,' বলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
ফেনী থেকে ডেইলি স্টারের সংবাদদাতা জানান, মহিপাল এলাকায় বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও, লালপোল থেকে বারইয়ারহাট পর্যন্ত পানি এখনও নামেনি। বিভিন্ন স্থানে হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি রয়েছে, যা যাত্রীদের জন্য চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বেচ্ছাসেবকরা রাস্তার বিভিন্ন স্থানে তাবু স্থাপন করে এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
ফেনীর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মুহাইমিনুল সোহাগ জানান, 'ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে ১৫৩ কিলোমিটার দূরত্বের পর থেকে মহাসড়ক বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে, এবং ফেনীর লালপোল এলাকায় পাঁচ থেকে ছয় কিলোমিটার এখনো পানির নিচে রয়েছে, যার ফলে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।'
'আমরা খবর পেয়েছি যে সিলোনিয়া নদীর ওপর ফেনীর লেমুয়া ব্রিজটি বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। তবে ক্ষতি কেমন তা বোঝা যাচ্ছেনা কারণ আমরা নিজেরাও পানিতে আটকা পড়ে আছি এবং কোথাও যেতে পারছি না,' বলেন তিনি।
Comments