সরকারবিহীন ৩২ ঘণ্টা

শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর হাজারো মানুষ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় দখল করে নেন। ছবি: সংগৃহীত

সারা দেশের মানুষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের অপেক্ষায় বসে আছেন। কিন্তু নতুন সরকার শপথ নেওয়ার এখনো কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বঙ্গভবন ও সচিবালয় সূত্রে এই তথ্য মিলেছে। এরই মধ্যে কোনো সরকার ছাড়াই প্রায় ৩২ ঘণ্টা পার করছে বাংলাদেশ।

সোমবার দুপুরের দিকে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন। সোমবার বিকেল ৪টার দিকে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান দ্রুত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গঠনের ঘোষণা দেন। কিন্তু কখন সরকার গঠন হবে তার কোনো ইঙ্গিত মিলছে না। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ১৯৭৫ সালের ৩ থেকে ৭ নভেম্বর সরকারবিহীন দেশ চলেছিল। এবারও তেমন একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো, যদিও প্রেক্ষাপট ভিন্ন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বৈঠক করবেন (এ প্রতিবেদন লেখার সময় বৈঠকটি চলছিল)। বৈঠকে সেনাপ্রধানের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। এর বাইরে আজ আর কোনো অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নেই বঙ্গভবনে।

এদিকে 'সরকারবিহীন' অবস্থায় এক ধরনের উৎকণ্ঠা কাজ করছে বেসামরিক প্রশাসনে। সচিবালয়ের সচিবরাসহ মাঠ প্রশাসনের বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি এবং ইউএনওরা ঠিকমতো অফিস করতে পারছেন না। তারা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো নির্দেশনা না থাকার কারণে আতঙ্কে সময় পার করছেন। সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বিভাগে পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মহড়া দিতে দেখা গেছে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের কেউ কেউ নিজেদের মধ্যে বিতণ্ডায় জড়িয়েছেন বলেও জানা গেছে।

অন্যদিকে জেলা-উপজেলায় সরকারি স্থাপনায় আক্রমণ হওয়ায় ডিসি এবং ইউএনওরা অফিস করতে পারছেন না। সিলেট বিভাগের একটি জেলার এডিসি ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছি, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে কোনো নির্দেশনা পাচ্ছি না। জেলা উপজেলা পর্যায়ের বেসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কেউ সেনাবাহিনীর সদস্যদের হেফাজতে, কেউ কেউ পরিচিত কিংবা আত্মীয়-স্বজনের আশ্রয় রয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা ডেইলি স্টারকে বলেন, দেশ পরিচালনা করতে হলে বেসামরিক প্রশাসনকে অবশ্যই নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রশাসন চালানোর পথ তৈরি করে দিতে হবে, অন্যথায় চলমান নৈরাজ্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ।

তিনি বলেন, যারাই সরকারের দায়িত্বে আসেন না কেন, বেসামরিক প্রশাসন ঠিক না থাকলে দায়িত্ব এসেও তারা সেটা পালন করতে পারবেন না। আমি আশা করব সংশ্লিষ্ট যারা আছেন তারা সরকারি কর্মকর্তাদের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ এই বিষয়টি দ্রুত উপলব্ধি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda Zia acquitted from Zia Orphanage Trust graft case

Following the judgement, there is no legal bar for Khaleda Zia to contest the next general election

54m ago