‘ঢাকার কোটা আন্দোলন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র অবগত, বিষয়টি আমাদের নজরে আছে’
ঢাকায় চলমান কোটা আন্দোলন বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারকে তার নিয়মিত ব্রিফিংয়ের সময় প্রশ্ন করা হলে জবাবে তিনি জানান, এ ঘটনা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র অবগত এবং বিষয়টি তাদের নজরে আছে।
প্রশ্নকর্তা বলেন, 'গত কয়েকদিন বাংলাদেশে হাজারো শিক্ষার্থী সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধা-ভিত্তিক নিয়োগ চালুর দাবিতে বিক্ষোভ করছে। ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র লীগ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালিয়ে প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থীকে আহত করেছে। এর আগে, প্রধানমন্ত্রী বিক্ষোভকারীদের হুমকি দেন। এমন কী, চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের জরুরি সেবা ইউনিটে প্রবেশ করার সময়ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়। বাংলাদেশে চলমান এই আন্দোলন বিষয়ে আপনার অবস্থান কী?
জবাবে ম্যাথু মিলার বলেন, 'আমরা ঢাকায় বড় আকারে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সম্পর্কে অবগত এবং এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ওপর নজর রাখছি। বিক্ষোভে হামলার শিকার হয়ে দুইজন নিহত ও একশোজন আহত হয়েছে। মত প্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার যেকোনো বিকাশমান গণতন্ত্রের অপরিহার্য ভিত্তিপ্রস্তর এবং আমরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের সহিংসতার নিন্দা জানাই। যারা এই সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের প্রতি আমরা সহমর্মিতা জানাচ্ছি।'
তবে এখন পর্যন্ত এই সহিংসতায় কেউ নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সকালে এক প্রেস নোটে জানায়, দুপুর ১টায় সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মন্তব্যের জবাবে ব্রিফিং করা হবে।
পরবর্তীতে প্রকাশিত বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ম্যাথু মিলারের বক্তব্যে হতাশা প্রকাশ করে।
মন্ত্রণালয় জানায়, 'তিনি (মিলার) বাংলাদেশে চলমান শিক্ষার্থী আন্দোলনে দুই জন নিহতের দাবি করেছেন, যা ভিত্তিহীন।'
বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় আরও জানায়, 'অসমর্থিত তথ্য ব্যবহার করে এ ধরনের ভিত্তিহীন দাবি সহিংসতাকে উসকে দিতে পারে। সহিংসতামুক্ত বিক্ষোভ ও আন্দোলন পরিচালনার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে বাংলাদেশ সরকার সচেষ্ট, যা এ ধরনের উদ্যোগে বিঘ্নিত হতে পারে।'
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হত্যা প্রচেষ্টা নিয়েও মন্তব্য করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, 'গণতন্ত্র ও রাজনীতিতে সহিংসতার কোনো স্থান নেই।'
'আমরা এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। এ ধরনের সহিংসতা গণতন্ত্রের মূল্যবোধের পরিপন্থী। বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী পৃথক পৃথক বক্তব্যে এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং মি. ট্রাম্প নিরাপদ আছেন এবং সুস্থ হয়ে উঠছেন জেনে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন।'
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখতে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।'
Comments