খুব বিরক্ত হয়ে কোটা বাদ দেওয়ার কথা বলেছিলাম: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোটা নিয়ে ধ্বংসাত্মক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: টিভি থেকে নেওয়া

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোটা নিয়ে ধ্বংসাত্মক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।

তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগের অফিসে আক্রমণ, মানুষের ওপর আঘাত, কিছু জ্ঞানীগুণী আছেন যারা ঘরের মধ্যে বসে মিথ্যা অপপ্রচার রেকর্ড করে ছেড়ে দিচ্ছেন—এসব দেখে আমি আমি খুব বিরক্ত হয়ে যাই। তখন এক পর্যায়ে বলি কোটা বাদ দিলাম।'

চীন সফর শেষে দেশে ফিরে আজ রোববার বিকেল ৪টার দিকে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তিনি বলেন, 'উদ্দেশ্যটা ছিল—আগে দেখ কোটা বাদ দিলে অবস্থাটা কী হয়। এখনো কী অবস্থা হয়েছে সেটা দেখতে বেশিদূর যাওয়া লাগবে না। এবারই দেখেন, ফরেন সার্ভিসে মাত্র দুই জন মেয়ে চাকরি পেয়েছেন। আর পুলিশ সার্ভিসে চার জন মেয়ে চান্স পেয়েছেন।'

তিনি বলেন, 'কোটা বন্ধ করার আজকে ফলাফলটা কী দাঁড়াল। …আমাদের দেশের সব এলাকা সমানভাবে উন্নত নয়। কোনো কোনো এলাকায় অনগ্রসর সম্প্রদায়ও আছে। সেইসব এলাকার মানুষের কি কোনো অধিকার থাকবে না। কোটা বন্ধ করে দেওয়ার পরে ২৩টি জেলা থেকে একজনও পুলিশে চাকরি পাননি।'

কোটার ব্যাপারে এখন সরকারের কোনো কিছু করার সুযোগ নেই মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষুব্ধ হয়ে মামলা করেছেন। যখন মামলা করার পর আদালত যখন কোনো রায় দেন তখন সরকারের নির্বাহী বিভাগের কিছু করার থাকে না। কারণ আদালতের বিষয় আদালতেই সমাধান করতে হবে।'

তিনি বলেন, 'যারা আন্দোলন করছেন তারা আইন মানবেন না, আদালত মানবেন না, সংবিধান কী তারা চিনবেন না, সরকার কীভাবে চলে সে সম্পর্কে তাদের ধারণা নেই জ্ঞান নেই। আমাদের সংবিধান কী বলে সেটা তাদের জানা উচিত। আদালত থেকে তাদের সমাধান আনতে হবে; আদালত তাদের বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ দিয়েছেন। তারা আদালতে গিয়ে তাদের কথা বলুক।'

কোটা নিয়ে সরকার কোনো উদ্যোগ নেবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'তারা (আন্দোলনকারীরা) রাজপথেই সমাধান চান। তারা আমাকে বলছেন। সত্যি কথা বলতে কি আদালতে যখন রায় হয়ে গেছে তখন তার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর কোনো অধিকার আমার নেই। এ ব্যাপারে সংবিধান কিছু বলে না; সংসদের কার্যপ্রণালী বিধিও কিছু বলে না। যতক্ষণ পর্যন্ত আদালত থেকে সমাধান না আসবে ততক্ষণ আমাদের কিছু করার থাকে না। এই বাস্তবতা তাদের মানতে হবে। আর যদি না মানে তাহলে আমাদের কিছু করার নেই। রাজপথে আন্দোলন করছে, আন্দোলন করতেই থাকবে। তবে কোনো ধ্বংসাত্মক কাজ করতে পারবে না। যতক্ষণ তারা শান্তিপূর্ণভবে আন্দোলন করছে ততক্ষণ কেউ কিছু বলছে না। এর বাইরে যখন কিছু করবে, পুলিশের গাড়ি ভাঙবে, বা পুলিশের গায়ে হাত তুলবে তখন আইন তার নিজের গতিতে চলবে।'

 

Comments