নারায়ণগঞ্জে জঙ্গি অভিযান: তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ

নারায়ণগঞ্জে জঙ্গি অভিযান
তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এসময় ফ্ল্যাটের জানালার কাঁচ ভেঙে নিচে পড়তে দেখা যায়। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার বরপা এলাকার সেই চারতলা বাড়িতে অভিযান চলাকালে তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ভবনটিতে ঢুকে অভিযান শুরু করে পুলিশের বিশেষায়িত সোয়াত ও অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) সদস্যরা।

পরে বিকেল পৌনে ৩টার দিকে বোমা ডিসপোজাল ইউনিটের এক সদস্যকে লাল বালতিতে 'বিস্ফোরক দ্রব্য' নিষ্ক্রিয় করার জন্য ভবনটির পাশে খালি জায়গায় এনে রাখতে দেখা যায়।

এর প্রায় ৩০ মিনিট পর সোয়া ৩টার দিকে তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এসময় ফ্ল্যাটের জানালার কাঁচ ভেঙে নিচে পড়তে দেখা যায়।

এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত পুলিশের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া এটিইউর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভবনটির তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটকে টার্গেট করে অভিযান চলছে। এখানে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল-ইসলামের সদস্যরা আস্তানা গেড়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।'

চারতলা এ ভবনটির মালিক সৌদি প্রবাসী জাকির হোসেন। সোয়াত ও এটিইউ সদস্যরা ভবনটির ভেতরে প্রবেশের পর দরজা ভাঙার শব্দ পাওয়া যায়।

অভিযানের আগে পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, গত ৮ ও ৯ জুন নেত্রকোণা সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের একটি দোতলা বাড়িতে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার কক্সবাজার থেকে এক নারী জঙ্গি সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রূপগঞ্জের বরপার আড়িয়াবো এলাকায় চারতলা এ ভবনটি চিহ্নিত করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বাড়িটি ঘিরে রাখে এটিইউ।

'এ ভবনের একটি ফ্ল্যাটে বোমা তৈরিতে এক্সপার্ট এক ব্যক্তিরও অবস্থান রয়েছে বলে তথ্য পেয়েছি। অভিযান শুরুর আগে বাড়ির সব সদস্যদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে', বলেন তিনি।

এটিইউ ও সোয়াত টিম ছাড়াও ঘটনাস্থলে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের সদস্যরাও রয়েছেন।

এ ভবনের নিচতলার ভাড়াটিয়া মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি তিন বছর ধরে বাড়িটিতে ভাড়া থাকেন। ভবনের মালিক জাকির হোসেনের পরিবারের কেউ এ বাড়িতে থাকেন না। 

গত তিনদিন ধরে তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখেছেন বলে জানান এ ভাড়াটিয়া।

তিনমাস আগে তৃতীয় তলার ওই ফ্ল্যাটে নতুন ভাড়াটিয়া উঠে। তাদের পরিবারে চারজন সদস্য, স্বামী-স্ত্রী ও দুই সন্তান। মধ্যবয়সী গৃহকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড এলাকার একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তবে গত তিনমাসে তার সন্দেহজনক কোনো গতিবিধি নজরে পড়েনি বলে জানান শাহনেওয়াজ।

তিনি বলেন, 'আজ সকালে দেখি পুলিশ সদস্যরা বাড়ি ঘিরে রেখেছে। দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি। পরে তারা জঙ্গির কথা জানায় এবং আমাদের সবাইকে বাড়ি থেকে নিরাপদে বের করে নেয়।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Fakhrul calls for unity among parties to restore democracy

Says empowering people through elections is the shared responsibility of all political forces

42m ago