দুর্নীতির দায়ে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হলো সহকারী পুলিশ সুপারকে

অসদাচরণ ও দুর্নীতির দায়ে এক সহকারী পুলিশ সুপারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। ইয়াকুব হোসেন নামের ওই কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে সারদা পুলিশ একাডেমিতে কর্মরত ছিলেন।

রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ইয়াকুব হোসেনের বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রাষ্ট্রপতি তাকে 'বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান' বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ইয়াকুব আগে কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর সার্কেলে কর্মরত ছিলেন। ওই সময় তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে একটি টিম গঠন করেন। এসআই জীবন বিশ্বাস, কনস্টেবল আল আমিন, কনস্টেবল মো. আবদুস সবুর, গাড়িচালক কনস্টেবল সামিউল ও কনস্টেবল অনিক এই টিমের সদস্য ছিলেন। ২০১৯ সালের ১৯ জানুয়ারি এসআই জীবন বিশ্বাস ও অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মিরপুর পৌর এলাকার মোশারফপুর তিন নম্বর ওয়ার্ডের লিপি কমিশনারের বাড়িতে আকস্মিকভাবে যান। সেখানে মায়া নামের এক নারীর সঙ্গে মো. আশরাফ হোসেন ও মো. শামীম রেজা অবস্থান করছিলেন। তখন পুলিশ সদস্যরা তাদের অবৈধ কাজ করার অভিযোগে হাতকড়া পরিয়ে বেধড়ক মারধর করেন এবং তাদের অর্ধনগ্ন অবস্থায় ছবি তোলেন। পরে মিরপুর বাজারের এমএসএফ (মুঠোফোনে অর্থ লেনদেন) ব্যবসায়ী সোহেল রানার মাধ্যমে ওই দুজনের কাছ থেকে এক লাখ টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেন।

এতে আরও বলা হয়, বিষয়টি তিনি (ইয়াকুব হোসেন) অবগত থাকা সত্ত্বেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না করে অপকর্মে সহায়তা করেন। এ অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২০ সালের ৯ নভেম্বর ইয়াকুব হোসেনের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮–এর বিধি ৩(খ) ও ৩(ঘ) অনুযায়ী অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী জারি করা হয়। অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। অভিযুক্ত কর্মকর্তা ব্যক্তিগত শুনানির আবেদন করেন এবং তার জবাব পর্যালোচনা করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গুরুদণ্ড আরোপের সম্ভাবনা থাকায় তদন্ত প্রতিবেদন প্রদানের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা যথাযথভাবে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেন, যেখানে ইয়াকুব হোসেনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়।

তদন্ত প্রতিবেদন, অপরাধের গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিক বিষয় বিবেচনা করে ইয়াকুব হোসেনের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮–এর বিধি ৪–এর উপ-বিধি ৩(খ) অনুযায়ী বাধ্যতামূলক অবসর, গুরুদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরের আদেশ কার্যকর করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Sohag’s murder exposes a society numbed by fear and brutality

It was a murder that stunned the nation, not only for its barbarity, but for what it revealed about the society we have become.

30m ago