২৭ দিন ধরে বন্ধ রায়েন্দা-মাছুয়া ফেরি চলাচল,দুর্ভোগে এলাকাবাসী

গত ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রিমালে রায়েন্দা ফেরি টার্মিনাল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ছবি: সংগৃহীত

গত ২৭ দিন ধরে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা এবং পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার মাছুয়ার মধ্যে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। 

গত ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রিমালে রায়েন্দা ফেরি টার্মিনাল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এই ফেরি রুটটি রায়েন্দা এবং মাচুয়া এর মধ্যে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। ২০২১ সালের ১০ নভেম্বর ফেরিটি চালু হয়। এটি দিয়ে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ এবং এক হাজারেরও বেশি যানবাহন চলাচল করত।

ঘূর্ণিঝড় রিমালে টার্মিনালের পন্টুন, সংযোগকারী রাস্তা এবং স্টিলের রেলিংগুলোর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি সংলগ্ন রাস্তাগুলো নদীতে বিলীন হয়েছে এবং স্থানীয় দোকানগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এখানে একটি বিকল্প ট্রলার টার্মিনাল চালু থাকলেও স্থানীয়দের অভিযোগ ট্রলারগুলো অন্য সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া নিচ্ছে। এছাড়া, ট্রলারগুলো ভ্যান, পিকআপ এবং ট্রাক পরিবহন করতে না পারায় স্থানীয় ব্যবসার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

রায়েন্দার বাসিন্দা মিজান শেখ বলেন, 'ফেরি সেবা বন্ধ থাকায় আমরা জরুরি কাজেও যাতায়াত করতে পারছি না। ট্রলার ব্যবহার করতে গেলে ৬০-১০০ টাকা খরচ হয় এবং সেগুলো নিজেদের সুবিধামতো সময়ে ছাড়ে।'

মাচুয়ার স্থানীয় বাসিন্দা জামাল উদ্দিন বলেন, 'ঈদের সময় অনেকেই তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সাথে দেখা করতে পারেনি। রায়েন্দা থেকে কেউ এখানে আসতে পারেনি।'

এই রুটের নিয়মিত যাত্রী ফয়জুল ইসলামও একই কথা জানান।

জানতে চাইলে রায়েন্দা টার্মিনালের পাশের একজন দোকানকর্মী হালিম বলেন, 'ফেরি সেবা শুরু হওয়ার পর আমি আমার দোকান দিয়ে পরিবার চালাতে পেরেছিলাম। টার্মিনালটি ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ। এর ফলে ছোট ব্যবসাগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং জীবনধারণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।'

রায়েন্দার গবাদি পশুর ব্যবসায়ী জলিল শেখ বলেন, 'আমরা আমাদের গবাদি পশু ঈদুল আজহার আগে মঠবাড়িয়ায় বিক্রির জন্য ফেরি ব্যবহার করতাম। এবার ঈদের আগে গবাদি পশু পরিবহন করতে পারিনি।'

এ বিষয়ে বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফারিদ উদ্দিন বলেন, 'ফেরি সেবা পুনরায় চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় মেরামতের বরাদ্দের প্রস্তাব আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি।'

 

Comments