হাড় কুড়িয়ে বিক্রি করেন তারা

হাড় কুড়িয়ে বিক্রি করেন তারা
কুড়িয়ে পাওয়া হাড় ভ্যানগাড়িতে করে বয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

রাজধানীর কচুখেতের পুলপাড়ে আজ সোমবার বিকেলের দিকে এক নারীকে ডাস্টবিন থেকে হাড় কুড়াতে দেখা যায়। কথা বলে জানা যায়, তার নাম মর্জিনা বেগম। তিনি প্রতি বছর কোরবানির ঈদে হাড় কুড়ান। তারপর সেগুলো বিভিন্ন ভাঙারির দোকানে বিক্রি করেন।

মর্জিনা বেগমের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে। তবে ৪৭ বছর বয়সী মর্জিনা বেগম বর্তমানে ঢাকার কচুখেতে থাকেন।

মর্জিনা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি সারাবছর টোকাইয়ের কাজ করি এবং বিভিন্ন ধরনের ভাঙারি টোকায়। কিন্তু কোরবানির ঈদে কেবল গরু ও ছাগলের হাড় সংগ্রহ করি।'

'আজ ২০০ কেজি হাড় বিক্রি করে এক হাজার টাকা পেয়েছি। সন্ধ্যার পরে হয় তো আরও ৫০ থেকে ৬০ কেজি বিক্রি করতে পারব,' বলেন মর্জিনা বেগম।

গত বছরের ঈদেও তিনি ২০০ কেজি হাড় বিক্রি করে এক হাজার টাকা পেয়েছিলেন বলেও জানান।

শুধু মর্জিনা বেগম নয় প্রতি বছর কোরবানির ঈদের সময় রাজধানীতে এভাবে হাড় কুড়াতে দেখা যায় অনেককে। তারা এগুলো সংগ্রহ করে বিভিন্ন ভাঙড়ির দোকানে বিক্রি করেন। ভাঙারি দোকানদাররা এই হাড় কিনে আবার মেলামাইন কোম্পানির কাছে বিক্রি করেন।

মোহাম্মদ হোসেন তেমনই একজন ভাঙারি দোকানদার। আজ সন্ধ্যায় বিভিন্ন স্থান থেকে হাড় কিনে ভ্যানগাড়িতে করে দোকানের নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।

জানতে চাইলে মোহাম্মদ হোসেন বলেন, 'সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত আমি পাঁচ টন হাড় কিনেছি। আমি সারাবছর ১২-১৩ জন টোকাইয়ের কাছ থেকে হাড় কিনি। তবে বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে কোরবানির ঈদে হাড় বেশি পাওয়া যায়। তাই এ সময় আলাদা করে কেবল হাড়ই কিনি।'

'আমরা কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা দাম দিয়ে থাকি এবং বিক্রি করি সাত টাকা কেজি। আমরা ৫০ কেজিতে মণ ধরি, কারণ ২০ শতাংশ বাদ দিতে হয়। অনেক হাড়ে মাংস লেগে থাকে সেগুলো বাদ দিয়ে দিতে হয়। এ কারণে মনপ্রতি ১০ কেজি বেশি ধরা হয়।'

তার ভাষ্য, 'প্রতি কেজিতে দুই টাকা লাভ রাখতে হয়। না হলে আমাদের পোষায় না। গাড়ি ভাড়া দিতে হয়, শ্রমিকদের মজুরি দেওয়াসহ আরও অনেক খরচ আছে।'

তিনি আরও বলেন, 'গত দশ বছর ধরে আমি এই ব্যবসা করছি। বিভিন্ন মেলামাইন কোম্পানির লোকেরা এসে আমাদের কাছ থেকে এই হাড় নিয়ে যায়। কোরবানির সময় আমরা টোকাইদের কাছ থেকে শুধু হাড় কিনি। তবে বছরের অন্য সময়ে কাচ, প্লাস্টিক ইত্যাদির সঙ্গে হাড় কিনতে হয়। কারণ তখন এত হাড় পাওয়া যায় না।'

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka airport receives 2nd bomb threat

Operations at HSIA continue amid heightened security

9m ago