ফরিদপুরে ২ নির্মাণশ্রমিককে ‘পিটিয়ে হত্যার’ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি গণসংহতির
ফরিদপুরের মধুখালীতে মন্দিরে প্রতিমায় আগুন দেওয়ার অভিযোগ তুলে দুই নির্মাণশ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের আহ্বান জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন।
আজ রোববার গণসংহতি আন্দোলনের দেওয়া বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, এই ঘটনায় আরও ৩-৪ জন শ্রমিক গুরুতর আহত হন এবং তাদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেলের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা মনে করি এই ঘটনা দেশে যে অগণতান্ত্রিক ও অসহিষ্ণু সংস্কৃতি চালু হয়েছে তারই ফলাফল। যখন রাষ্ট্র নিজেই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড করে এবং তাকে প্রশ্রয় দেয়, তখন জনগণের ভেতরেও এই ধরনের পিটিয়ে মারার সংস্কৃতি চালু হয়। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, এই শ্রমিকরা অভিযোগকৃত আগুন দেওয়ার ঘটনায় আদৌ জড়িত ছিলেন এমন কোনো প্রমাণ নেই। এমনকি যদি প্রমাণ থাকতও, তবুও তাদের পিটিয়ে মেরে ফেলার অধিকার কারো নেই। এরকম পরিস্থিতিতে তাদের আটক করে আইনের হাতে সোপর্দ করাই হলো নাগরিকের কর্তব্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো বাংলাদেশ এ ধরনের কোনো ঘটনার বিচার এবং দোষীদের আইনগতভাবে শাস্তি দেওয়ার নজির আমরা দেখতে পাই না। বরং এগুলোকে জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে রাজনীতির হাতিয়ার করা হয়।
তারা আরও বলেন, বর্তমান সরকারের শাসনামলে হিন্দু মন্দিরে বা বৌদ্ধ মন্দিরে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর এগুলোর কোনোটিই বিচার সম্পন্ন হয়নি। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব নাগরিকের নিরাপত্তা বিধানের ও তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ব ছিল রাষ্ট্র ও সরকারের। তারা শুধু সেটা পালনে ব্যর্থই হয়নি, বরং সেগুলোতে নানাভাবে ইন্ধন জুগিয়েছে এবং রাজনৈতিকভাবে তাকে ব্যবহার করেছে। বাংলাদেশের জনগণকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে এবং কুচক্রীদের সম্প্রদায়িক মতলবকে ব্যর্থ করে দিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
সবশেষে বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা অবিলম্বে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের আহ্বান জানাই। আমরা বাংলাদেশের জনগণের কাছে আহ্বান জানাই, বাংলাদেশকে একটি উদার গণতান্ত্রিক পরমত সহিষ্ণু দেশ হিসেবে তৈরির রাজনৈতিক সংগ্রামকে বেগবান করুন। বাংলাদেশকে একটি সাম্প্রদায়িক, উগ্র, নিপীড়নকারী দেশ হিসেবে চিহ্নিত করার অপতৎপরতা রুখে দিন।
Comments