ভিজিএফ কার্ড না পেয়ে ইউপি সদস্যকে পেটালেন ছাত্রলীগ নেতা
লালমনিরহাট সদরে এক ইউপি সদস্যকে পিটিয়ে আহত করেছে স্থানীয় এক ছাত্রলীগ নেতা ও তার সমর্থকরা। মঙ্গলবার দুপুরে মহেন্দনগর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ওই ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এরশাদুল হককে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছেন স্থানীয়রা।
অভিযুক্ত আবুল কালাম আজাদ রতন মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে মঙ্গলবার বিকেলে লালমনিরহাট-কুড়িগ্রাম সড়ক অবরোধ করেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা।
পরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন ও থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ রতন ৫-৬ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে যান। ইউপি সদস্য এরশাদুল হককে বাইরে ডেকে এনে তারা মারধর করেন। ওই ইউপি সদস্য একপর্যায়ে আহত হয়ে মাটিতে পড়ে যান।
আহত এরশাদুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ছাত্রলীগ নেতা রতন আমার কাছে ৪০টি ভিজিএফ কার্ড চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে কোনো কার্ড দেইনি। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ওপর হামলা চালিয়েছেন। আমি সুস্থ হয়ে মামলা করব।'
প্রত্যক্ষদর্শী ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মমতাজ বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার সামনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর ইউপি সদস্য এরশাদুলকে মারধর করেছে। তাদের মারধর সহ্য করতে না পেরে এরশাদুল মাটিতে লুটে পড়েন।'
জানতে চাইলে মহেন্দ্রনগর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ মন্ডল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঈদ উপলক্ষে দুস্থদের জন্য ইউনিয়নে ৪ হাজার ৮১৩টি ভিজিএফ কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ৯ ইউপি সদস্য ও ৩ সংরক্ষিত মহিলা সদস্যের প্রত্যেককে ২০০ ভিজিএফ কার্ড দেওয়া হয়েছে।'
ইউপি সদস্যকে মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'প্রকাশ্যে ইউপি সদস্যকে মারপিট করে আহত করার প্রতিবাদ ও দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে আমরা সড়ক অবরোধ করেছি।'
এদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ রতন মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, 'ইউপি সদস্য এরশাদুল আমার আত্মীয় হন। তার সঙ্গে আমাদের পারিবারিক দ্বন্দ্ব। এ বিষয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছিল। আমি তার কাছে কোনো ভিজিএফ কার্ড দাবি করিনি। তাকে আমরা মারধরও করিনি।'
যোগাযোগ করা হলে মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন চন্দ্র দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম। পারিবারিক একটা বিষয় নিয়ে ইউপি সদস্যের সঙ্গে কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটেছে। মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।'
জানতে চাইলে লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুজন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আহত ইউপি সদস্য এরশাদুল হক সুস্থ হলে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপাতত পরিস্থিতি শান্ত আছে।'
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, 'অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
Comments