৬ জেলায় কালবৈশাখীতে ১১ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ১
কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতে ছয় জেলায় অন্তত ১১ জন নিহত ও দুজন নিখোঁজ হয়েছেন। এর মধ্যে পটুয়াখালীর বাউফলে তিন জন, ঝালকাঠিতে তিন জন, বাগেরহাটে একজন, পিরোজপুরে দুইজন, নেত্রকোণায় একজন ও খুলনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া বাউফলে নিখোঁজ রয়েছেন একজন।
পটুয়াখালীর বাউফল
পটুয়াখালীর বাউফলে কালবৈশাখী ঝড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়াও তেতুলিয়া নদীতে নিখোঁজ রয়েছে এক জেলে। বিধ্বস্ত হয়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি। বজ্রপাতে ১০টি গরুও মারা গেছে। গাছপালা উপড়ে বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
বাউফলের নাজিরপুর গ্রামের জহির সিকদারের কিশোর ছেলে মোহাম্মদ রাতুল শিকদার (১৫) বজ্রপাতে এবং দাসপাড়া ইউনিয়নের চর আলগি এলাকার বৃদ্ধ সাফিয়া বেগম (৮০) গাছ চাপা পড়ে মারা যান।
বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বশির গাজী বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, তেতুলিয়া নদীতে নিখোঁজ ইব্রাহিম ফরাজীর (৪৩) উদ্ধার করা হয়েছে, তবে আরেক জেলে ইসমাইল রাঢ়ী (৪০) এখনো নিখোঁজ আছেন। তারা দুজনেই চন্দ্রদীপ ইউনিয়নের চর ওয়াডেলের বাসিন্দা।
তিনি আরও জানান, ঝড়ে বাউফলে শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপনের কাজ চলছে।
ঝালকাঠিতে বজ্রপাতে নিহত ৩
ঝালকাঠিতে রোববার সকালে বজ্রপাতে এক স্কুলছাত্রীসহ তিন নারী নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার উত্তর তালগাছিয়া গ্রামের হেলেনা বেগম (৪০), শেখেরহাট গ্রামের মিনারা বেগম (৩৫) এবং পোনাবালিয়া গ্রামের মাহিয়া আক্তার এসানা (১১)।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঝালকাঠির পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল জানান, গবাদি পশু ফিরিয়ে আনতে মাঠে যাওয়ার সময় বজ্রপাতে তারা মারা যান।
বাগেরহাটে একজনের মৃত্যু
বাগেরহাটে কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের সময় গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে কচুয়া উপজেলা চরসোনাকুড় গ্রামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া বাগেরহাট শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিলবোর্ড ভেঙে যাত্রীবাহী বাসের চালকসহ তিন জন গুরুতর আহত হয়েছে।
আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঝড়ে শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ, রামপাল, কচুয়া ও বাগেরহাট সদর উপজেলায় বহু গাছ উপড়ে গেছে। সেই সঙ্গে বিধ্বস্ত হয়েছে কয়েকশ কাঁচা ও আধা পাকা বাড়ি। ঝড়ে গাছ পড়ে ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পুরো জেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে জেলা সদরসহ অন্যান্য উপজেলাগুলোতে গাছপালা উপড়ে পড়ার পাশাপাশি কিছু বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
পিরোজপুরে ঝড়ে দুইজনের মৃত্যু
পিরোজপুরে আকস্মিক ঝড়ে দুইজন নিহত ও বেশ কয়েকজন শিশুসহ ১৪ জন আহত হয়েছেন। আজ সকালে পিরোজপুর সদর উপজেলায় কালবৈশাখী আঘাত হানে।
মাত্র ১৫ মিনিট স্থায়ী এই ঝড়ে প্রায় একশ ঘরবাড়ি ও কয়েক হাজার গাছপালা উপড়ে গেছে।
নিহত রুবি বেগম (২২) উপজেলার দক্ষিণ মারিচল গ্রামের মিরাজ সরদারের স্ত্রী।
এছাড়া, শারিকতলা ডুমুরিতলা ইউনিয়নের বৃদ্ধ অনিল পাল (৮২) সকালে ঘর থেকে বের হয়ে বৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবের মধ্যে পড়েন। পরে পাশের নলবুনিয়া খাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
খুলনায় নিহত ১
খুলনায় বজ্রপাতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া ওবায়দুল্লাহ গাজীর (৩৫) বাড়ি ডুমুরিয়া উপজেলার কোমলপুর গ্রামে।
গুটুদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানশেখ তুহিনুল ইসলাম তুহিন ডেইলি স্টারকে বলেন, সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বজ্রপাতের সময় ওবায়দুল তার ঘরে ছিলেন। ঘরের চাল ভেদ করে বজ্রপাতের আঘাতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় তার একটি গরুও মারা যায়।
নেত্রকোণায় বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু
নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় বজ্রপাতে এক কৃষক মারা গেছেন। মৃত শহিদ মিয়া উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। সকালে মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাত হলে আঘাতে তিনি মারা যান।
Comments