বাংলাদেশ

গাজীপুরের শ্রীপুরে মধ্যযুগের স্থাপত্যের ধ্বংসাবশেষ ও দেয়ালের খোঁজ

যেসব পুরাকীর্তির সন্ধান পাওয়া গেছে সেগুলো ১২০৪ সাল থেকে ব্রিটিশ আমলের মধ্যবর্তী সময়ে নির্মিত স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ।
শ্রীপুর উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের খোঁজেখানি গ্রামে মধ্যযুগীয় স্থাপত্য কীর্তির ধ্বংসাবশেষের সন্ধান করছেন ড. সুফি মুস্তাফিজুর রহমান। ছবি: স্টার

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের খোঁজেখানি গ্রামে মধ্যযুগীয় স্থাপত্য কীর্তির ধ্বংসাবশেষের সন্ধান পাওয়া গেছে। 

ওই এলাকার টেক টিলা, প্রকৃতি, অবকাঠামো, প্রাচীন ইটের খণ্ডাংশ পর্যবেক্ষণ করে আজ শুক্রবার প্রত্নতত্ত্ববিদ ড. সুফি মুস্তাফিজুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

এ গবেষক দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ওই এলাকার আকন্দপাড়া, শেখপাড়া এবং টোক্কার ভিটা এলাকায় পুরাকীর্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। 

স্থানীয় ভৌগোলিক মানচিত্র নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুফি পুরাকীর্তির ধ্বংসাবশেষ শনাক্ত করেন। 

ওই এলাকায় বিভিন্ন সময় মাটি খনন করা হলে মধ্যযুগের স্থাপত্যের এসব ইট পাওয়া যায়। ছবি: স্টার

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী গোলাম মাওলা মুরাদ, স্থানীয় মাওনা মডেল কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মিশকাত রাসেল প্রমুখ।

ওই এলাকার বাসিন্দা হাশেম শেখ ও হেলেনা বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের বাড়িতে আগের দিনের বড় বড় ইট আছে। বিভিন্ন সময় মাটি খনন করা হলে এসব ইট পাওয়া গেছে।' 

অধ্যাপক সুফি মুস্তাফিজুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খোঁজেখানি এলাকায় যেসব পুরাকীর্তির সন্ধান পাওয়া গেছে সেগুলো ১২০৪ সাল থেকে ব্রিটিশ আমলের মধ্যবর্তী সময়ে নির্মিত স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ। কোথাও কোথাও তৎকালীন আমলে স্থাপিত দেয়ালের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।'

'খোঁজেখানি এলাকার কিছু কিছু অংশ খনন করা হলে ভালো কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বেশি প্রয়োজন,' যোগ করেন তিনি। 

এই গবেষকের দাবি, বাঙালিরা অনেক আগে থেকেই বেশ সুদক্ষ ছিল। পুরাকীতির্র এসব ধ্বংসাবশেষ তারই প্রমাণ।

তিনি বলেন, 'পুরাকীর্তি অনুসন্ধান করে মানুষের মধ্যে তার জ্ঞান ছড়িয়ে দিলে, তা মানসিকভাবে জাতিকে যেরকম সমৃদ্ধ করবে, পাশাপাশি বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকেও সমৃদ্ধ করবে।' 

পাশের কাপাসিয়া উপজেলার দরদরিয়া গ্রামে একডালা দুর্গ হিসেবে পরিচিত এলাকাটির ঠিক উল্টোদিকে তথা শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম তীরে এই খোঁজেখানি এলাকার অবস্থান। 

বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের বাড়ির সামনে দিয়ে চলে যাওয়া সড়ক ধরে আধা কিলোমিটার উত্তর দিকে গেলেই দরদরিয়া দুর্গের অবস্থান।

সুফি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'দরদরিয়া দুর্গটির আকার অর্ধচন্দ্রাকৃতির। রয়েছে দুর্গ প্রাচীর ও পরিকল্পিত পরিখা। পূর্ব দিকে অর্ধচন্দ্রের পরিধিব্যাপী পরিখা এবং পশ্চিম দিক ঘেঁষে নদী বানার (শীতলক্ষ্যা)। দরদরিয়া দুর্গটি প্রকৃতি এবং মানবসৃষ্ট পরিখার এক দারুণ কৌশলগত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Personal data up for sale online!

A section of government officials are selling citizens’ NID card and phone call details through hundreds of Facebook, Telegram, and WhatsApp groups, the National Telecommunication Monitoring Center has found.

2h ago