এমন দুর্যোগ কখনো দেখিনি, প্রতিষ্ঠান জবরদখল করে নিচ্ছে, কার কাছে যাব: ড. ইউনূস

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪। ছবি: পলাশ খান/স্টার

গ্রামীণ ব্যাংকের বিরুদ্ধে গ্রামীণ টেলিকম ভবনে থাকা আটটি প্রতিষ্ঠান জবরদখল করে নেওয়ার অভিযোগ তুলে নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, 'আমরা বহু রকমের দুর্যোগের ভেতর দিয়ে যাই। এরকম দুর্যোগ আর দেখি নাই কোনোদিন যে, হঠাৎ করে বাইরের থেকে কিছু লোক এসে বলল তোমরা সরে যাও।'

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রামীণ টেলিকম ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ড. ইউনূস। এই ভবনে ড. ইউনূসের গড়া মোট ১৬টি প্রতিষ্ঠান আছে, যার প্রতিটির চেয়ারম্যান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ড. ইউনূস বলেন, 'আমরা একটা ভয়ংকর অবস্থার মধ্যে পড়ে গেছি। আমরা এই সুন্দর বিল্ডিংটা বানিয়েছিলাম অতি সম্প্রতি। আমরা যখন গ্রামীণ ব্যাংকে ছিলাম, তখন আমাদের অফিস ওখানে ছিল। যখন আমাদের যাওয়ার পালা আসল তখন আমরা ভাবলাম আমরা সবাই মিলে একটা বিল্ডিং করি যেখানে আমরা শান্তিতে কাজকর্ম করতে পারব। এটাই সেই জিনিস; আমাদের স্বপ্নের বীজতলা। এটা তার একটা নমুনা।'

ড. ইউনূস আরও বলেন, 'হঠাৎ চারদিন আগে (১২ ফেব্রুয়ারি) দেখলাম বাইরের লোক এসে এটা জবরদখল করে নিচ্ছে। আমরা বাইরের লোক হয়ে গেলাম তাদের কাছে। তারা এটা তাদের নিয়মে চালানোর চেষ্টা করছে। আমি বুঝতে পারলাম না এটা কীভাবে হয়।'

ঘটনাটি পুলিশকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি মন্তব্য করে এই নোবেলজয়ী আরও বলেন, 'আমরা পুলিশকে বললাম যে এরকম কাণ্ড হচ্ছে। আপনারা এসে দেখেন। ঠিক করে দেন। পুলিশ প্রথমে (অভিযোগ) গ্রহণই করল না। তারপর একবার এসে ঘুরে গেল। কোনো অসুবিধা দেখল না। আমরা তাদের বললাম—দেখেন আমাদের দরজায় তালা দিয়ে যাচ্ছে তারা। সকাল বেলা এসে তালা খুলে দিচ্ছে। এখনো সেই পরিস্থিতি বিরাজমান।'

দেশের আইন-আদালত কোথায় গেল—এমন প্রশ্ন রেখে ড. ইউনূস বলেন, 'আমরা সকাল থেকে শুনছি এখানে ঝাড়ু নিয়ে মিছিল হচ্ছে। কেন হচ্ছে তাও বুঝছি না। আমরা ঝাড়ুর যোগ্য হয়ে গেলাম হঠাৎ করে। আমরা তো নিজের বাড়িতেই আছি। নিজের ঘরে আছি। আর কারও ঝামেলার মধ্যে তো আমরা যাই না।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের যত প্রতিষ্ঠান আমরা গড়ে তুলেছি তার প্রধান কার্যালয় এখানে। আমার পেছনে আমার পাশে যারা দাঁড়িয়ে আছে সারাজীবন ধরে তারা কাজ করে গেছে এগুলোকে সফল করার জন্য। দেশের মানুষের মঙ্গলের জন্য।'

এই ভবনে থাকা প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ব্যবসার মুনাফার টাকায় গড়ে উঠেছে মন্তব্য করে ড. ইউনূস বলেন, এখানে হস্তক্ষেপ করার কোনো এখতিয়ার গ্রামীণ ব্যাংকের নেই। গ্রামীণ ব্যাংকের টাকায় এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে নাই।

এর প্রতিকারে আদালতের দ্বারস্থ হবেন কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আর কোথায় যাব?

সংবাদ সম্মেলনে যে আটটি প্রতিষ্ঠানে তালা লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করা হয় সেগুলো হলো—গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ মৎস্য ও পশু সম্পদ ফাউন্ডেশন, গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশন, গ্রামীণ সামগ্রী, গ্রামীণ ফান্ড, গ্রামীণ শক্তি ও গ্রামীণ কমিউনিকেশন।

সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলাম, গ্রামীণ কল্যাণের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম মঈনুদ্দিন চৌধুরীসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English
bangladesh bank buys dollar

BB buys $313m more from 22 banks

Bangladesh Bank purchased another $313 million from 22 commercial banks in an auction yesterday, reacting to the sharp drop in the US dollar rate.

4h ago