বিশ্বকে আরেকটু ভালো জায়গায় নেওয়ার কাজ করছেন ড. ইউনূস: আইওসি সভাপতি

ড. ইউনূস ও টমাস বাখ। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে খেলাধুলা ও সামাজিক ব্যবসার ফিউশনকে প্রতিপাদ্য করে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে 'ইউনূস কোরিয়া'।

২০২৪ সালের শীতকালীন যুব অলিম্পিকের প্রেক্ষাপটে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের সহআয়োজক ছিল সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ওয়েলনেস কনভারজেন্স সেন্টার।

গত ২ ফেব্রুয়ারির ওই অনুষ্ঠানে এক ভিডিও বার্তায় ড. ইউনূসকে নিয়ে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) সভাপতি টমাস বাখ বলেন, 'তিনি (ড. ইউনূস) আমাদের সবার অনুপ্রেরণার উৎস। তিনি ক্রীড়া ও সামাজিক ব্যবসাকে সমন্বিত করার জন্য যা যা করছেন, সেটার জন্য আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই। বিশ্বকে আরেকটু ভালো জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।'

অনুষ্ঠানে শিক্ষাবিদ, শিক্ষার্থী, সরকারি কর্মকর্তা ও ক্রীড়াবিদদের উদ্দেশে কথা বলেন টমাস বাখ। তিনি বলেন, 'আমরা ক্রীড়ার মাধ্যমে বিশ্বকে মানুষের জন্য আরও ভালো জায়গা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আরও ভালো একটি বিশ্ব গড়তে আমাদেরকে একে অপরের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। হাতে হাত রেখে পারস্পরিক সংহতির মাধ্যমে আমরা বিশ্বকে আরও উন্নত একটি জায়গায় পরিণত করতে পারি।

'একইসঙ্গে সামাজিক ব্যবসার মূলেও রয়েছে সংহতির চিন্তাধারা। এই মতবাদটি (সামাজিক ব্যবসা) সবার সামনে প্রথম তুলে ধরেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ও আমার প্রিয় বন্ধু অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি সবসময় সমাজের উন্নয়নে  প্রথাগত অর্থনৈতিক চিন্তাধারার প্রতি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এসেছেন।'

সামাজিক ব্যবসার সঙ্গে অলিম্পিক গেমসের মিলের জায়গাটি ব্যাখ্যা করে টমাস বাখ বলেন, 'ক্রীড়া জগতের কেন্দ্রেও রয়েছে নিজের সক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ার ধ্যানধারণা। এদিক থেকে অলিম্পিক গেমসের সঙ্গে সামাজিক ব্যবসার বড় মিল রয়েছে। সামাজিক ব্যবসার মতো অলিম্পিক গেমসও আমাদের সেরাটা দিতে অনুপ্রাণিত করে। তাই স্বভাবতই এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে আইওসি ও অধ্যাপক ইউনূস একাধিক প্রকল্পে একত্রে কাজ করছে।'

টমাস বাখ জানান, এসব প্রকল্পের মধ্যে আছে আইওসি ইয়ুথ লিডারশিপ প্রজেক্ট, ইমার্জিং ইউথ পিস ক্যাম্প ও অ্যাথলেট ৩৬৫ বিজনেস অ্যাক্সেলারেটর।

টমাস বাখ বলেন, 'এগুলোই অলিম্পিয়ানদের জন্য প্রথম অন্ট্রাপ্রেনারশিপ উদ্যোগ, যার মাধ্যমে তারা তাদের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারে সহায়তা পেতে পারেন।'

টমাস বাখ আরও বলেন, '(ড. ইউনূসের) আন্তর্জাতিক সুনাম ও তিনি বিশ্ববাসীর কাছ থেকে যে পরিমাণ সম্মান পান, তা থেকে এটা নিশ্চিত যে তিনিই (আইওসির জন্য) নিখুঁত অংশীদার। তিনি ক্রীড়াবিদদের সঙ্গে তার অগাধ জ্ঞান উদারভাবে ভাগ করে নেন।'

ড. ইউনূসের এই অসামান্য অবদানের জন্য আইওসি তাকে অলিম্পিক লরেল উপাধি দিয়েছে মন্তব্য করে আইওসি সভাপতি বলেন, 'যাদের ক্রীড়ার মাধ্যমে শিক্ষা, সংস্কৃতি, টেকসই উন্নয়ন ও শান্তিতে অসামান্য অর্জন রয়েছে, তাদের আইওসি এই সম্মান দিয়ে থাকে।'

টমাস বাখ বলেন, 'টোকিওতে আয়োজিত ২০২০ সালের অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে অধ্যাপক ইউনূসকে এই খেতাব দেওয়া হয়। ড. ইউনূস ক্রীড়াজগতে সামাজিক ব্যবসার চিন্তাধারা নিয়ে এসেছেন এবং আমি মনে করি, ক্রীড়াও তাকে তার কাজে অনুপ্রেরণা দিচ্ছে।'

তিনি জানান, ড. ইউনূস এখন চলতি বছর প্যারিসে অনুষ্ঠেয় অলিম্পিক ও প্যারাঅলিম্পিকের আয়োজক কমিটির সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছেন, যাতে সামাজিক ব্যবসার চিন্তাগুলো এই আয়োজনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকে।

আইওসি সভাপতি বলেন, 'সামাজিক ব্যবসা ও ক্রীড়াকে একসঙ্গে এনে আমরা প্রকৃত অর্থেই অলিম্পিকের মূল উদ্দেশ্যকে এগিয়ে নিচ্ছি।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Ending impunity for crimes against journalists

Though the signals are mixed we still hope that the media in Bangladesh will see a new dawn.

15h ago