একজন বীর মুুক্তিযোদ্ধার ভাষ্য

‘চাওয়া-পাওয়ার হিসাব করি না, কিন্তু সমালোচনা শুনলে কষ্ট হয়’

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শহীদ সহযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান জানাতে সাভারের গাজীরচট এলাকা থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে এসেছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসনাত।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসনাত। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শহীদ সহযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান জানাতে সাভারের গাজীরচট এলাকা থেকে আজ শনিবার জাতীয় স্মৃতিসৌধে এসেছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসনাত। শরীরে বয়সের ছাপ পড়লেও তার কণ্ঠ এখনো বলিষ্ঠ। শহীদ বেদীতে ফুল দেওয়ার পর অন্য সহযোদ্ধাদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি।

সেসময় রণাঙ্গনের এই বীর যোদ্ধার সঙ্গে কথা হয় দ্য ডেইলি স্টারের।

আবুল হাসনাত বলেন, '১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে রক্তের বিনিময়ে আমরা এদেশের মানুষকে একটা লাল সবুজের পতাকা, একটা স্বাধীন দেশ উপহার দিতে পেরেছি। এটাই বড় প্রাপ্তি, শান্তির বিষয়। এটা আমাদের ব্যক্তিগত কোনো যুদ্ধ ছিল না। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম। আমাদের সেই লক্ষ্য অর্জন হয়েছে। এটাই বড় পাওয়া।'

একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ব্যক্তিগত কোনো চাওয়া-পাওয়ার হিসাব তিনি করেন না বলে মন্তব্য করেন আবুল হাসনাত। জানান, মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে যখন কেউ কটু কথা বলে, সমালোচনা করে তখন তার কষ্ট হয়। এ ব্যাপারে তার বক্তব্য, 'অনেকে বলে মুক্তিযোদ্ধাদের সরকার এত টাকা ভাতা দিতেছে, অতো অতো সুযোগ-সুবিধা দিতেছে—এগুলার কী দরকার। এই ধরনের আলোচনা শুনলে খুব কষ্ট হয়। আমরা চাই যতদিন বেঁচে থাকি মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরণ করে লোকে আমাদের সম্মান করুক।'

আবুল হাসনাত বলতে থাকেন, 'যুদ্ধের শুরুতে আমরা ট্রেনিং নিতে ভারতে গিয়েছিলাম। যুদ্ধক্ষেত্রেও আমাদের কাছে মা-বাবা, ভাই-বোন কিংবা নিকটাত্মীয়দের কেউ ছিলেন না। তাই সহযোদ্ধারাই ছিলেন আমাদের সব। বিজয়ের দিনে তাদের সবার কথা মনে পড়ে। স্মৃতিসৌধে আসি। খুব ভালো লাগে।'

একই জায়গায় উপস্থিত আরেক বীর মুক্তিযোদ্ধা সার্জেন্ট মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, 'কোনো কিছু চাওয়ার জন্য না, পাওয়ার জন্য না—আমারা মুক্তিযুদ্ধ করেছি একজন বঙ্গবন্ধুর ডাকে। তার নির্দেশেই নয় মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। এটাই বড় প্রাপ্তি।'

ফরিদ উদ্দিনও বলেন, 'চাওয়া-পাওয়ার হিসাব করি না। দেশ এগিয়েছে। মানুষ এখন আর না খেয়ে থাকে না।'

Comments

The Daily Star  | English
US airstrike on Iran

Strikes on Iran mark Trump's biggest, and riskiest, foreign policy gamble

The dramatic US strike, including the targeting of Iran’s most heavily fortified nuclear installation deep underground, marks the biggest foreign policy gamble of Trump’s two presidencies and one fraught with risks and unknowns.

1h ago