বাগেরহাটে ২৭ ইউপি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ, আতঙ্কে কর্মচারী-সেবাপ্রার্থী
বাগেরহাটের উপজেলাগুলোয় সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে ২৭টি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন। দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে আছেন এসব ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের কর্মচারী ও সেবাপ্রার্থীরা।
জেলা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, জেলার অন্তত ২৭ ইউপি ভবনের প্লাস্টার খসে পড়ছে, দেয়ালে ফাটল ধরতে শুরু করেছে, ছাদ থেকে পানি পড়ছে।
এর মধ্যে, বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ, কড়াপাড়া, গাংনী, কলতলা, তেলিগাতী, বাধল, রায়েন্দা, বনগ্রাম, রামচন্দ্রপুর ও বড়বাড়িয়াসহ কয়েকটি ইউপি ভবন বেশি ঝুঁকিতে আছে।
এসব ইউপি ভবনে অন্তত পাঁচ লাখ মানুষ নিয়মিত সেবা নিতে যান।
কচুয়া উপজেলার বাধাল ইউনিয়ন পরিষদে প্রতিদিনই সেবা নিতে মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। ভবনটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন সবাই। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ওই ভবনে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই তাদের।
বাধাল ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ শাহ আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। ছাদ থেকে পানি পড়ে, ফাটল ধরেছে। খুব ভয়ে ভয়ে ডিউটি করি।'
বাধাল ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে আসা ওই এলাকার বাসিন্দা মিনারা বেগম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় সব সময়ই উদ্বিগ্ন থাকি।'
বাধাল ইউপি চেয়ারম্যান নকিব ফয়সাল ওহিদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের বেহাল দশা। আশেপাশে অন্য কোনো ভবন না থাকায় এখানেই কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। যারা প্রতিদিন সেবা নিতে আসেন তারাও নিজ দায়িত্বেই আসেন।'
তিনি আরও বলেন, 'কয়েকটি দপ্তরে আবেদন করেছি। ভবনটি সংস্কার হওয়া বা নতুন ভবন হওয়া খুবই জরুরি।'
মোরেলগঞ্জ উপজেলার তেলিগাতীতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার ইউনিয়ন পরিষদ ভবনেরও বেহাল দশা। ভবনের কয়েকটি স্থান থেকে প্লাস্টার খসে পড়ছে এবং ছাদেও ফাটল দেখা দিয়েছে।
তেলিগাতীর ইউপি চেয়ারম্যান মোরশেদ আক্তার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভবনের বেহাল দশার কারণে সেবা দিতে গিয়েও সমস্যায় পড়ছি। অতি দ্রুত সংস্কার হওয়া বা নতুন ভবন হওয়া দরকার।'
বাগেরহাট এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শরিফুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জেলার ৭৫টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে ৪৮টিতে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। আমরা মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প পাঠিয়েছি। আশা করি, তহবিল পেলে দ্রুত কাজ শুরু হবে।'
'তাছাড়া, তহবিলের অভাবে মোরেলগঞ্জ উপজেলার জিউধারা ইউপি ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ আছে। আমরা এসব ভবনের তালিকা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। প্রকল্পটি অনুমোদন হলে শিগগিরই নতুন পরিষদ ভবন নির্মাণ করা হবে,' যোগ করেন তিনি।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. খালেদ হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি নিজেই দেখেছি কতগুলো ইউনিয়ন পরিষদ ভবন সংস্কারের উপযুক্ত নয়। সেখানে নতুন ভবন দরকার।'
তিনি আরও বলেন, 'মোরেলগঞ্জের বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদসহ কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে শিগগির নির্মাণের ব্যবস্থা করব।'
Comments