কাঁচামরিচ-আলু-ডিম তো ইউক্রেন-রাশিয়া থেকে আসে না, দাম বাড়ায় কে: রওশান এরশাদ

Raushan Ershad
রওশন এরশাদ। স্টার ফাইল ছবি

সিন্ডিকেটের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ বলেছেন, 'প্রতিদিনের রান্নায় ব্যবহৃত কাঁচামরিচ, আলু, ডিম তো আর ইউক্রেন বা রাশিয়া থেকে আসে না। তাহলে এগুলোর দাম বাড়ায় কে?'

তিনি আরও বলেন, 'দেশের মূল্যস্ফীতির পেছনে ভূ-অর্থনৈতিক প্রভাব যতটা না কাজ করছে, এর চেয়ে বেশি কাজ করছে অসাধু সিন্ডিকেটদের নৈরাজ্য।'

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রওশন এরশাদ বলেন, 'নানাবিধ কারণে রেমিট্যান্স কমে যাওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে ডলার সংকট, টান পড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। মূল্যস্ফীতির কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বাজারে অনিয়ন্ত্রিত সিন্ডিকেট এবং কিছু অব্যবস্থাপনার কারণে স্বল্প ও মাধ্যম আয়ের মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। দ্রুত বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে মানুষকে স্বস্তি দেওয়া এখন বড় চ্যালেঞ্জ।'

তিনি বলেন, 'দেশের বাজারে খাদ্যপণ্যসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েই চলেছে। অব্যাহত মূল্যস্ফীতির কারণে ভোক্তাদের এখন দম বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি। সবচেয়ে বেশি বেগতিক অবস্থায় রয়েছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত।'

'মূল্যস্ফীতির চাপ এতটাই ভয়াবহ যে এটি যে কোনো দেশ, এমনকি বিশ্বের গতিপথ বদলে দিতে পারে। তাই যৌক্তিক মূল্যস্ফীতি মোকাবিলার পাশাপাশি নজর দিতে হবে এসব সুযোগ-সন্ধানীর দিকে, যারা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে নিজেরা লাভবান হচ্ছেন, বিপদে ফেলে দিচ্ছেন পুরো দেশ ও জাতিকে,' বলেন তিনি।

বিরোধী দলীয় এই নেতা বলেন, 'সরকারের সুষ্ঠু নজরদারি আর দৃঢ় পদক্ষেপের অভাবে খুচরা ব্যবসায়ীরাও অযৌক্তিক দামে পণ্য বিক্রি করছেন। অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে প্রতিটি ভোগ্যপণ্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। যাদের কিছু সঞ্চয় আছে, তারা তাও ভেঙে ফেলছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। ফলে যতই উন্নয়নের কথা বলা হোক, সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা যদি সহজ না হয়, সাধ্য ও আয়ত্তের মধ্যে না আসে, তাহলে এসব উন্নয়ন অনেকের কাছেই অর্থহীন হবে।'

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে একটি মডেল নির্বাচন হবে বলেও এ সময় প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি বলেন, 'দশকের পর দশক ধরে দেশে নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতা, সংঘাত ও প্রাণহানির পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকুক এটা কেউই চায় না।'

রওশন এরশাদ বলেন, 'আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র বক্তব্য দিয়েছে। বিপরীতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে; অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করার ব্যাপারে সরকার বদ্ধপরিকর।  সব দলকে নির্বাচনমুখী করাই হবে নির্বাচন কমিশনের মূল লক্ষ্য। এ ক্ষেত্রে তারা কতটা সফল হন, এটাই এখন দেখার বিষয়।'

'আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নতুন নির্বাচন কমিশনের হাতে খুব বেশি সময় নেই। এর মধ্যেই সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করতে হবে। দশকের পর দশক ধরে দেশে নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতা, সংঘাত ও প্রাণহানির পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকুক, আমরা তা চাই না,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

13 former BDR members walk out of jail after 16 years

Family members expressed overwhelming joy at the release, reuniting with their loved ones

12m ago