ম্রো পাড়ার জায়গা রাবার কোম্পানির নামে লিজ দেওয়া আছে: সংসদীয় কমিটি

ম্রো পাড়া পরিদর্শন করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির গঠিত উপকমিটি। ছবি: মং মারমা

বান্দরবানের লামায় রেংয়েন ম্রো পাড়া পরিদর্শন করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির গঠিত উপকমিটি। ওই পাড়ার ম্রো ও ত্রিপুরাদের সঙ্গে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের ভূমি বিরোধ তদন্তে তারা আজ ‍বুধবার পাড়াটি পরিদর্শনে যান।

রেংয়েন পাড়ায় ম্রো, ত্রিপুরা পাড়াবাসী ও লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রির পরিচালকদের উপস্থিতিতে আলোচনা সভা হয়।

আলোচনা শেষে এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী ক্ষতিগ্রস্ত ম্রো, ত্রিপুরা পাড়ার প্রধানদের (কারবারি) ডেকে বলেন, এই জায়গাটা রাবার কোম্পানির নামে লিজ দেওয়া আছে। আপনারা এখানে বসবাস করলেও আপনাদের নামে জমির দলিল নেই। জমির মালিক আপনারা নন।

তিনি ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারের জন্য ৫ একর করে করে ৩৬ পরিবারের জন্য ১৮০ একর জমি রাবার কোম্পানির কাছ থেকে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। এ ছাড়া, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য ৫ একর, ৩ গ্রামের জন্য ১৫ একর এবং শ্মশানের জন্য ২০ একরসহ মোট ২২০ একর জমির প্রস্তাব মেনে নেওয়ার অনুরোধ করেন।

তিনি আরও বলেন, পার্বত্য শান্তিচুক্তির পর বর্তমানে যেহেতু ভূমি বন্দোবস্ত প্রক্রিয়া বন্ধ আছে, প্রয়োজনে আপনাদের জন্য বিশেষ অনুরোধ করে আইনটা আবার চালু করে আপনাদের ৩ গ্রামবাসীদের নামে ২২০ একর জমির বন্দোবস্ত করা হবে।

তবে পাড়ার নেতারা ৪০০ একর জমির দাবি জানান।

উপকমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয়রা। ছবি: মং মারমা

আলোচনায় ম্রোদের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের দিনরাত আতঙ্কে কাটছে। বারবার তাদের ফলের বাগান ও জুম বাগানে রাবার কোম্পানির লোকজন আগুন দিচ্ছে, ঘরবাড়িতে হামলা করছে। আবার তাদের বিরুদ্ধেই মামলা করা হচ্ছে। কোম্পানির লোকেরা আমাদের ঘর পুড়িয়ে দিলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের বিরুদ্ধে গত ১ জানুয়ারি রাতে এই পাড়ায় আগুন ও ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। স্থানীয়দের অভিযোগ, তাদের পূর্বপুরুষের জমি দখলের জন্য তাদের পাড়ায় আগুন দেওয়া হয়।

এই বিরোধ নিয়ে আলোচনার জন্য সংসদীয় উপকমিটির সদস্যরা আজ বেলা ১১টায় রেংয়েন পাড়ায় পৌঁছান। তাদের মধ্যে ছিলেন উপকমিটির আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম-৬ আসনের সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপঙ্কর তালুকদার, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পাড়ার বাসিন্দা ও রাবার কোম্পানির প্রতিনিধিদের নিয়ে সংসদীয় কমিটি সদস্যদের বৈঠকের কথা রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৫ মার্চ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের একটি দল লামায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সে সময় কমিশনের সদস্য কংজরী চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, তদন্তে তারা অগ্নিসংযোগের সত্যতা পেয়েছেন। সে অনুযায়ী রিপোর্ট দেওয়া হবে।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

12h ago