২ মে থেকে ঢাকায় কুমিল্লা-সিলেট, জানুয়ারি থেকে চট্টগ্রামের বাস কাউন্টার থাকবে না

সন্ধ্যায় নগর ভবনের মেয়র হানিফ মিলনায়তনে বাস মালিক শ্রমিক সমিতির সঙ্গে সমন্বয় সভায় ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস জানিয়েছেন, কুমিল্লা ও সিলেটগামী বাস ২ মে থেকে এবং চট্টগ্রামগামী বাস আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে ঢাকার ভেতর কোনো কাউন্টার রাখতে পারবে না।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় নগর ভবনের মেয়র হানিফ মিলনায়তনে বাস মালিক শ্রমিক সমিতির সঙ্গে সমন্বয় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সভায় বাস মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতারা বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালগুলো ব্যবহার উপযোগী হওয়ার পর ঢাকা শহরের ভেতর বাস কাউন্টার বন্ধ করা, দক্ষিণাঞ্চলের যেসব বাসের রুট পারমিট বন্ধ রয়েছে সেগুলোর রুট পারমিট দেওয়াসহ বেশ কিছু প্রস্তাবনা দেন।

মালিক-শ্রমিক নেতাদের প্রস্তাবনার জবাবে ডিএসসিসি মেয়র তাপস বলেন, 'যে শহরের গণপরিবহন ব্যবস্থাপনা যত বেশি শৃঙ্খলিত সে শহর তত বেশি বাসযোগ্য ও আধুনিক। আপনাদের যেসব প্রস্তাবনা রয়েছে তা যদি পুরোপুরি বিবেচনা করা হয় তাহলে বিষয়টা দাঁড়ায় যে, দিন শেষে তালগাছ আমার! আমাদেরকে এটা (ঢাকার ভেতর বাস কাউন্টার বন্ধ) করতেই হবে। টার্মিনালে ঢুকতেই হবে। না হলে গণপরিবহনের শৃঙ্খলা আসবে না। অবশ্যই আমরা অনুধাবন করি, বাস্তবতা এটাই, সব একসঙ্গে করা সম্ভব না। এজন্য আমরা পর্যায়ক্রমে, ধীরে-ধীরে, ধাপে-ধাপে এগোব।'

তিনি বিভিন্ন পর্যায়ের রূপরেখা তুলে ধরে বলেন, 'আজকের সমন্বয় সভায় সামগ্রিক পর্যালোচনা ও সামনের পবিত্র ঈদ-উল-আযহার সময় বিবেচনায় নিয়ে ১ এপ্রিলের পরিবর্তে ২ মে (১ মে ঈদের বন্ধ) থেকে সিলেট ও কুমিল্লাগামী বাসের সব কাউন্টার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে স্থানান্তর করতে হবে। আর আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে কাঁচপুরের আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ব্যবহার উপযোগী হয়ে যাবে। তাই আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লাসহ ওই এলাকার সব জেলার বাস কাউন্টার সেখানে স্থানান্তর করতে হবে। ঢাকার অভ্যন্তরে তখন সেসব এলাকার আর কোনো কাউন্টার রাখা যাবে না।'

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, 'আসন্ন রমজান মাসে জনগণের দুর্ভোগ যেন না হয় সেটিকে গুরুত্ব দিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে হবে। রমজান মাসে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমি চাই রমজান মাসে যেন কোন অভিযান পরিচালনা করতে না হয়।'

ডিএনসিসি মেয়র আরও বলেন, 'ঢাকা শহরের যানজট কমাতে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালগুলো শহরের বাইরে নিতে আমরা কার্যক্রম শুরু করেছি। মেট্রোরেলের স্টেশনগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। ট্রানজিট ওরিন্টেড ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে যাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করা হবে। টার্মিনাল নির্মাণের আগে মহাখালী বাস টার্মিনালটি পেছনের অংশে বর্ধিত করে টার্মিনালের শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা হবে। পেছনে বর্ধিত করলে টার্মিনালের ক্যাপাসিটি বাড়বে। দ্রুতই এটি করা হবে।'

সভায় সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের আধুনিকায়ন করার পর কী কী থাকছে তার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

এ সময় ঢাকা মহানগরীর গণপরিবহনকে শৃঙ্খলায় নিয়ে আসতে ২ মেয়রের সঙ্গে একযোগে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে বাস মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতারা অঙ্গীকার করেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান, ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙা ও মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন, যুগ্ম পুলিশ কমিশ (ট্রাফিক) এস এম মেহেদী হাসান বক্তব্য দেন।

এর আগে আজ সকালে খিলগাঁওয়ে আরেকটি কর্মসূচিতে ডিএসসিসি বলে, বাধা থাকা সত্ত্বেও নগরীর গণপরিবহনকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনা হবে।

ডিএসসিসি মেয়র বলেন, 'গণপরিবহন ব্যবস্থার বর্তমান নাজুক ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির পেছনে অনেক চক্র ও স্বার্থান্বেষী মহল জড়িত। তারা অবশ্যই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিকে শৃঙ্খলার আওতায় আনতে চাইবে না।'

এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র তাপস বলেন, 'বাস কাউন্টারকে কেন্দ্র করে যেখানে-সেখানে আর বাস রাখতে দেওয়া হবে না।'

তিনি আরও বলেন, তারা সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের আধুনিকায়ন করছেন এবং এর পরিসর বাড়াচ্ছেন। মার্চের মধ্যে এর কাজ শেষ হবে।

'সায়েদাবাদে আধুনিকীকরণের কাজ শেষে টার্মিনালের বাইরে বাস রাখার প্রয়োজন নেই। এপ্রিল থেকে সব বাস কাউন্টার টার্মিনালে আনার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা পর্যাপ্ত কাউন্টারের ব্যবস্থা করেছি। তারা বাস রাস্তায় না রেখে টার্মিনাল ব্যবহার করবে', যোগ করেন ডিএসসিসি মেয়র।

ডিএসসিসি বাস রাখার জন্য টার্মিনালে একটি ডিপোর ব্যবস্থাও করেছে বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
Banking sector crisis

Why is the banking sector crisis so deep-rooted?

The regime-sponsored immorality to protect or pamper the financial gangsters not only eroded the future of the banking sector, but also made the wound too difficult to recover from.

4h ago