একুশের অনুষ্ঠানে পুলিশি বাধার প্রতিবাদে গণসংহতি আন্দোলনের সমাবেশ
নারায়ণগঞ্জে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পুলিশের বাধার প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে গণসংহতি আন্দোলন। সমাবেশে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সাংস্কৃতিক কর্মীরাও অংশ নেন।
আাজ বুধবার বিকেলে শহরের চাষাঢ়ায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে সংগঠনের জেলা কমিটির ব্যানারে এই সমাবেশ হয়। এ সময় উপস্থিত নেতারা স্লোগান দেন 'একুশের উচ্চারণ, দূর হ দুঃশাসন'।
গতকাল ২১ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের অনুষ্ঠানে বাধা দেয় পুলিশ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যানার সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয় তারা। ওই ব্যানারে লেখা ছিল 'একুশের উচ্চারণ, দূর হ দুঃশাসন'। পরে ব্যানারে কালো কাপড় লাগিয়ে একুশের অনুষ্ঠান শেষ করেন আয়োজকরা।
একুশের অনুষ্ঠানে পুলিশের বাধার প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা বলেন, 'এই দেশে দুঃশাসন চলছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও সত্যিকার স্বাধীনতার স্বাদ দেশের মানুষ পায়নি। প্রতিনিয়ত প্রতিবাদী কণ্ঠ দমনে নিপীড়ন চলছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার কথা শুনতেও ভয় পায়। কিন্তু আমরা কথা বলতে ভয় পাই না। এই দেশ কোনো পুলিশি রাষ্ট্র নয়, জনগণের রাষ্ট্র। জনগণের রাষ্ট্রে দুঃশাসন থাকতে পারে না। তাই সমস্বরে আমরা বলি, একুশের উচ্চারণ দূর হ দুঃশাসন। এটাই আমাদের প্রতিবাদী ভাষা।'
গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সমন্বয়কারী তরিকুল সুজনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল, সমগীত সংস্কৃতি প্রাঙ্গণের সাবেক সভাপ্রধান শিল্পী অমল আকাশ, গণসংহতি আন্দোলন জেলা কমিটির নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস, মহানগরের আহ্বায়ক নিয়ামুর রশীদ বিপ্লব, সাধারণ সম্পাদক পপি রাণী সরকার, ফতুল্লা থানার আহ্বায়ক জাহিদ সুজন, জেলা সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা।
বক্তারা বলেন, 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের অনুষ্ঠানে ব্যানার খুলে নিতে নির্দেশ দেয় পুলিশ। ওই ব্যানারে উল্লেখ ছিল একুশের উচ্চারণ, দূর হ দুঃশাসন। দুঃশাসন শব্দ নিয়ে পুলিশের আপত্তি। এই দেশে যে দুঃশাসন চলছে তারই প্রমাণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পুলিশের বাধা দেওয়া। এই বাধাই প্রমাণ করে আমরা দুঃশাসনের মধ্যে আছি। কিন্তু মনে রাখতে হবে ক্ষমতা কখনই চিরস্থায়ী হয় না। আগেও কোনো স্বৈরাচার সরকার তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে পারেনি, আগামীতেও পারবে না।'
মঙ্গলবার রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে থাকাকে কেন্দ্র করে গণসংহতি আন্দোলনের তরিকুল সুজনের সঙ্গে পুলিশের 'অসদাচরণ' ও তাকে দেড় ঘণ্টা থানায় রেখে মুচলেকায় ছাড়ারও প্রতিবাদ জানানো হয় সমাবেশে।
বক্তারা বলেন, 'দুপুরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাধা দিলো পুলিশ। রাতে অনুষ্ঠান শেষে তরিকুল সুজনকে পুলিশ আটক করে। কী কারণে তরিকুলকে নেওয়া হয়েছিল সেই হিসাব আমরা বুঝি। পুলিশ জনগণের নিরাপত্তা না দিয়ে এখন সরকারি দলের পাহারাদারে রূপান্তরিত হয়েছে। এটা জনগণ সহ্য করবে না।'
Comments