বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করতে রাশিয়া প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: দূতাবাস

রাশিয়া বলেছে যে, তারা বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে 'সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ'।

আজ মঙ্গলবার ঢাকায় রাশিয়ান দূতাবাস এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, 'বাংলাদেশের মতো যে সব রাষ্ট্র বাইরের শক্তির নেতৃত্ব অনুসরণ না করে তাদের নিজস্ব জাতীয় স্বার্থে তাদের পররাষ্ট্র ও অভ্যন্তরীণ নীতি গঠন করে, তারাও একই পন্থা অবলম্বন করে।'

দূতাবাস বলেছে যে, রাশিয়া তাদের আরও উন্নয়নের উপায় স্বাধীনভাবে নির্ধারণ করতে এবং নব্য-ঔপনিবেশিক পদ্ধতির অধীন নয় এমন একটি ব্যবস্থা গঠনে দেশগুলোর আকাঙ্ক্ষাকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে।

১৯৬৫ সালের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অগ্রহণযোগ্যতা এবং তাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা সম্পর্কিত জাতিসংঘের ঘোষণা অনুসারে 'যেকোনো কারণে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বা বহিরাগত বিষয় অন্য কোনো রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ করার অধিকার নেই'।

দুর্ভাগ্যবশত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে (বিশেষ করে, স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর) হস্তক্ষেপ না করার নীতি লঙ্ঘনের বিষয়টি বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। কারণ অনেকে বিশ্বাস করে যে, তারা তাদের নিজস্ব স্বার্থে উক্ত নীতি লঙ্ঘন করতে পারে।

রাশিয়ান দূতাবাস বলেছে, 'যারা উন্নত গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে নিজেদের তুলে ধরে, সে দেশগুলোর আধিপত্যবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষাগুলো সবচেয়ে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠে।'

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, 'তারা শুধু সার্বভৌম জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপই করে না, বরং ব্ল্যাকমেইলিং, অবৈধ বিধিনিষেধ ইত্যাদির অবলম্বনও করে।'

অনেক দেশের সার্বভৌমত্ব অভূতপূর্ব ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছে উল্লেখ করে রাশিয়ান দূতাবাস বলেছে, 'অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। যেমনটি রাশিয়ান ফেডারেশনের ২০১৭ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেডারেশন কাউন্সিলের রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষার অ্যাডহক কমিশন দ্বারা প্রমাণিত।'

বিবৃতিতে বলা হয়, 'এই ধরনের পদক্ষেপগুলো বহুবিধ এবং এরমধ্যে রয়েছে নিয়ন্ত্রিত অ-বাণিজ্যিক একাধিক সংস্থা প্রতিষ্ঠা বা সমর্থন করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করা, জনমত গঠনের জন্য গণমাধ্যম এবং সামাজিক নেটওয়ার্কগুলোর ব্যবহার, প্রতিবাদকে উস্কে দেওয়া এবং ফেডারেল বা আঞ্চলিক নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করা।'

এতে আরও উল্লেখ করা হয় যে, 'কৌশলগত স্বাধীনতা এবং একটি ন্যায্য বিশ্বব্যবস্থার সার্বভৌম দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখা দেশগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অন্যান্য সরঞ্জাম রয়েছে।'

রাশিয়ার দূতাবাস বলছে, 'গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ' রক্ষার অজুহাতে যারা নিজেদের 'বিশ্বের শাসক' বলে মনে করে, তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কাজ চলছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'এই ধরনের নীতি স্পষ্টতই বিশ্ব ব্যবস্থার স্থায়িত্বকে হ্রাস করে, বিশৃঙ্খলা ও বিপর্যয় ডেকে আনে। অসম্পূর্ণ তালিকায় যুগোস্লাভিয়া, ইরাক, লিবিয়া, ইয়েমেন, সিরিয়া এবং আফগানিস্তান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

65% of suicide victims among students are teenagers: survey

At least 310 students from schools, colleges, universities and madrasas died by suicide last year

3h ago