শাহীনবাগের ঘটনায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত খুবই অসন্তুষ্ট: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দেশে বিভিন্ন সময়ে গুম হওয়া কয়েকজনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। ২০১৩ সাল থেকে নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের শাহীনবাগে বাসায় পিটার হাস যখন অবস্থান করছিলেন তখন বাইরে 'মায়ের কান্না' সংগঠনের ব্যানারে কিছু মানুষ জড়ো হন। এই অবস্থায় নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে যান।
এই ঘটনার পর রাষ্ট্রদূত জরুরি ভিত্তিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তিনি জানান, শাহীনবাগের ওই বাসার বাইরে অনেক লোক দেখে নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে সেখান থেকে সরিয়ে নেন।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন পিটার হাসকে উদ্ধৃত করে বলেন, 'নিরাপত্তা অনিশ্চয়তা দেখে মার্কিন রাষ্ট্রদূত শাহীনবাগের বাসা থেকে চলে যান। এতে তিনি খুবই অসন্তুষ্ট হয়েছেন।'
'আমি রাষ্ট্রদূতকে বলেছি, আপনার নিরাপত্তার দায়িত্ব আমাদের। আপনার ওপর বা আপনার লোকের ওপর কেউ কি আক্রমণ করেছে? উনি বললেন না। তিনি বললেন যে তার গাড়িতে হয়ত দাগ লেগেছে। তবে তা নিশ্চিত না। আমি বললাম যে আপনাকে ও আপনাদের লোকদের আমরা অধিকতর নিরাপত্তা দেবো।'
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওই বাড়িতে পিটার হাসের যাওয়ার বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানত না। মার্কিন দূতাবাস তাদের এই তথ্য জানায়নি।
'রাষ্ট্রদূতকে আমি বলেছি, দেখুন আমি মিডিয়াকে আটকাতে পারব না। আমাদের দেশের মিডিয়া খুব সোচ্চার। আপনারা বলেন যে তাদের 'ফ্রিডম অব স্পিচ' নেই। কিন্তু আমাদের মিডিয়া সোচ্চার। আমি তাদের দূরে রাখতে পারি। কিন্তু বাধা দিতে পারব না। লোকজনকেও বাধা দিতে পারব না।'
পিটার হাসকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমি আপনার নিরাপত্তার জন্য তাদের দূরে রাখতে পারব। ইউ নো ইটস অ্যা কান্ট্রি অব ফ্রি স্পিচ। এখানে তারা তাদের বক্তব্য দেবে, আমি তাদের অ্যারেস্ট করতে পারব না। তবে আপনার ওপর যদি কেউ আক্রমণ করে থাকে, তাহলে নিশ্চয়ই তাকে গ্রেপ্তার করতে পারব। এছাড়া কিছু করতে পারব না।'
ইউটিউবসহ কিছু প্ল্যাটফর্মে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'এগুলো সব বানোয়াট। আর বিদেশিরাও এসব থেকে রিপোর্ট করে ফেলে। লজ্জার বিষয় হলো জাতিসংঘের মতো একটা সংস্থা আমাদের ৭৬ জনের একটা তালিকা দিলো, যারা নাকি নিখোঁজ হয়ে গেছে। নাম পাওয়ার পর দেখলাম ১০ জনকে পাওয়া গেল। ভারত থেকে বলল তাদের ২ জন নাগরিক আমাদের লিস্টে ঢুকে গেছে।'
পৃথিবীর সব দেশে মানুষ গুম হয়, নিখোঁজ হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমেরিকায় প্রতিবছর ১ হাজারের বেশি লোককে পুলিশ মেরে ফেলে। আমরা চাই না আমাদের দেশে একটা লোক বিনা বিচারে মারা যাক।'
Comments