র‌্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে ৫ পর্যবেক্ষণ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের (এনএসসি) দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক এইলিন লুবাখার ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

র‌্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পাঁচটি পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং বাংলাদেশ সেগুলো অনুসরণ করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সফররত মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করে সম্পর্কের নতুন অধ্যায় সৃষ্টির আগ্রহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দুই দিক থেকেই সদিচ্ছা আছে। একসঙ্গে আমরা আমাদের সম্পর্কের নতুন অধ্যায় তৈরি করতে চাই।'

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের নতুন অধ্যায় চায়, এটি একটি বড় বিষয়।

সম্পর্ক জোরদারের মাধ্যমে জনগণ উপকৃত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরাও তাদের সঙ্গে সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে চাই।'

প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের (এনএসসি) দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক এইলিন লুবাখার, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) সহকারী প্রশাসক মাইকেল শিফার এবং যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার তিনদিনের সফরে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।

এইলিন লুবাখার তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সাংবাদিকদের বলেন, 'আমাদের অভিন্ন অগ্রাধিকার এবং ভবিষ্যতে একসঙ্গে কাজের ক্ষেত্রে সহযোগিতার উপায় নিয়ে আলোচনা করে আমরা আনন্দিত।'

তিনি আরও বলেন, 'তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে।'

বৈঠক শেষে মার্কিন দূতাবাস এক পৃথক বার্তায় বলে, 'অর্থনৈতিক উন্নয়ন, নিরাপত্তা, শরণার্থী, জলবায়ু, শ্রম ও বাণিজ্যসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমাদের দুই দেশ কীভাবে কাজ করতে পারে তা নিয়ে আমরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি।'

এতে বলা হয়, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি বাংলাদেশ ও এ অঞ্চলের জন্য নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করেছে। 'আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করেছি।'

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রকে গাজায় যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম খুনি রাশেদ চৌধুরী প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য তারা মার্কিন প্রতিনিধি দলের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। মার্কিন পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিষয়টি মার্কিন বিচার বিভাগের অধীনে রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তিন মার্কিন কর্মকর্তা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে 'কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে পারস্পরিক স্বার্থের অগ্রগতির জন্য একটি অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি এগিয়ে নেওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে' সফর করছেন।

তারা পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, শ্রমিক নেতা, যুব কর্মী এবং মুক্ত ও অবাধ গণমাধ্যম তৈরির কাজে নিয়োজিতদের সঙ্গেও বৈঠক করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মার্কিন কর্মকর্তাদের সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আরও গভীর ও সম্প্রসারিত হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যে চিঠি দিয়েছেন তা দুই দেশের সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পত্রের উত্তরে প্রধানমন্ত্রীর লেখা পত্রের একটি কপি মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী লুবাখারকে হস্তান্তর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

জাতীয় নির্বাচনের পর ৮ জানুয়ারি এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, 'অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য আমাদের অভিন্ন লক্ষ্য এগিয়ে নিতে, বাংলাদেশে মানবাধিকার ও নাগরিক সমাজকে সমর্থন এবং আমাদের জনগণের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গভীর করতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।'

এর আগে প্রতিনিধিদলের একাংশ পররাষ্ট্রসচিব রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন।

এ দিন দুপুরে আসিয়ান দেশগুলোর ঢাকায় নিযুক্ত হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতরা পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। মন্ত্রী জানান, আসিয়ানের পর্যবেক্ষক হিসেবে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি ও এই জোটভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ব্রুনাই, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতরা বৈঠকে অংশ নেন।

Comments

The Daily Star  | English

ICT case: Hasina charged with crimes against humanity

ICT prosecution pressed formal charges against Sheikh Hasina in a case filed over crimes against humanity committed during July mass uprising

2h ago