আরও বিদেশি ঋণ চায় বাংলাদেশ রেলওয়ে

প্রতীকী ছবি

উন্নত পরিষেবা দিতে রেললাইন সম্প্রসারণসহ কিছু কাজের জন্য ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের (ইআইবি) কাছে আরও ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

গত রোববার রাজধানীর রেল ভবনে এক বৈঠকে ইআইবি প্রতিনিধিদলের কাছে ৮টি প্রকল্প তুলে ধরে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

ইআইবি সাধারণত বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকল্পে সহ-অর্থায়ন (ঋণ প্রদানকারী অন্য সংস্থার সঙ্গে মিলে যৌথভাবে অর্থায়ন) করে থাকে। রোববারের বৈঠকে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ রেলওয়ের ৩ কর্মকর্তা জানান, ইআইবি প্রতিনিধিদল ঋণের বিষয়টি নিয়ে তাদের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, বৈঠকে বাংলাদেশ রেলওয়ের নেতৃত্বে ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবির। আর ৩ সদস্যের ইআইবি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন ইআইবি গ্লোবালের এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক বিভাগের পাবলিক সেক্টর অপারেশনের প্রধান এডভারদাস বুমস্টেইনাস।

ইআইবি ইতোমধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের ২টি প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে। একটি হলো আখাউড়া-লাকসাম ডাবল লাইন স্থাপন প্রকল্প এবং অপরটি ২০০টি ব্রড-গেজ (বিজি) ক্যারেজ সংগ্রহ প্রকল্প।

ইআইবি প্রতিনিধিদলের কাছে উপস্থাপন করা ৮টি প্রকল্পের মধ্যে ৩টি সিভিল প্রকল্প ও ৫টি মেকানিক্যাল প্রকল্প।

সিভিল প্রকল্পগুলোর মধ্যে একটি হলো ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল যোগাযোগ উন্নত করার জন্য লাকসাম-চট্টগ্রাম রুটে ১২৩ দশমিক ৭৬ কিলোমিটার দীর্ঘ মিটারগেজ (এমজি) ডাবল লাইনকে ডুয়াল-গজ লাইনে রূপান্তর করা। এ প্রকল্পের জন্য ১ হাজার ৭৯৭ দশমিক ৫১ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন হয়েছে।

দ্বিতীয় প্রকল্পটি ঢাকা-লাকসাম রুটে কর্ড লাইন নির্মাণ। এ প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ৮৮ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন লাইন নির্মাণের জন্য আনুমানিক ব্যয় হবে ৩ হাজার মিলিয়ন ডলার।

আরেকটি প্রকল্প হলো ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ ভৈরব বাজার-ময়মনসিংহ এমজি লাইনকে ডুয়াল-গজ লাইনে রূপান্তর করা। প্রকল্পটিতে ব্যয় হবে প্রায় ১ হাজার ৬৮০ মিলিয়ন ডলার।

এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ইতোমধ্যে প্রথম ২টি প্রকল্পে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং ইতোমধ্যে এগুলো এডিবির পাইপলাইনে তালিকাভুক্ত হয়েছে।

রোববারের বৈঠকে অংশ নেওয়া এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এই ২ প্রকল্পে এডিবির সঙ্গে সহ-অর্থায়নে ইআইবি প্রতিনিধিদলও আগ্রহ প্রকাশ করেছে।'

৫টি মেকানিক্যাল প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ৪৬টি বিজি লোকোমোটিভ সংগ্রহ; ২০০টি এমজি ক্যারেজ সংগ্রহ; ট্যুরিস্ট ট্রেনের জন্য ৫৪টি এমজি ক্যারেজ সংগ্রহ; ৭০টি এমজি লোকোমোটিভ সংগ্রহ; এবং একটি সৈয়দপুর ও পাহাড়তলীতে হেভি ডিউটি ওয়ার্কশপ আধুনিকীকরণ প্রকল্প।

৫টির মধ্যে ২টি প্রকল্প (২০০টি এমজি ক্যারেজ ও ৭০টি এমজি লোকোমোটিভ সংগ্রহ) দরপত্রদাতাদের অর্থায়নে বাস্তবায়িত হওয়ার কথা ছিল।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভিন্ন সমস্যার কারণে এই প্রকল্পগুলোর জন্য ঋণ চুক্তি সই করতে পারেনি। তাই তারা এখন তহবিলের নতুন উত্স সুরক্ষিত করে এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে চায়।

২০০টি এমজি ক্যারেজ প্রকল্পের জন্য ১৪৫ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। আর ৭০টি এমজি লোকোমোটিভ প্রকল্পের জন্য খরচ হবে ৩১২ দশমিক ৮৬ মিলিয়ন ডলার।

বৈঠকে অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা আরও জানান, এই ২ প্রকল্পেও বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ইআইবি প্রতিনিধিদল।

বৈঠকে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদারও উপস্থিত ছিলেন। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইআইবি প্রতিনিধিদল তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Drug sales growth slows amid high inflation

Sales growth of drugs slowed down in fiscal year 2023-24 ending last June, which could be an effect of high inflationary pressure prevailing in the country over the last two years.

17h ago