৬৪টি দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তপ্রায়

সংসদে বক্তব্য দিচ্ছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। ছবি: টিভি থেকে নেওয়া

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, দেশীয় প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় মাছের সংখ্যা ৬৪টি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে এ তথ্য জানান।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের (লক্ষ্মীপুর-২) এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, 'দেশীয় মাছ আমাদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং প্রাণিজ আমিষের প্রধান উৎস। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন ও অতি আহরণের ফলে দেশীয় প্রজাতির অনেক মাছ বিলুপ্তির তালিকায়।'

মন্ত্রী রেজাউল করিম বলেন, 'দেশীয় প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় মাছ রক্ষায় সরকারের পক্ষ থেকে মৎস্য অধিদপ্তর পরিকল্পনা নিয়েছে এবং তা বাস্তবায়িত হচ্ছে।'

মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ও অবাধ বিচরণের অনুপযোগী হয়ে পড়া জলাশয় সংস্কার, পুনঃখনন ও খননের মাধ্যমে উন্নয়ন করে দেশীয় মাছের আবাসস্থল পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সরকার ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে জানান তিনি। 

মন্ত্রী আরও বলেন, 'দেশীয় প্রজাতির মাছের বিলুপ্তি রোধ ও প্রাচুর্য রক্ষার্থে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন নদনদী ও অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে স্থাপিত ৪৩২টি অভয়াশ্রম সুফলভোগীদের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হচ্ছে।'

মৎস্য অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠার ফলে বিলুপ্তপ্রায় এবং বিপন্ন ও সুলভ প্রজাতির মাছের পুনরাবির্ভাব ও প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

মন্ত্রী জানান, বিলুপ্তপ্রায় মাছ পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ করতে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) গবেষণা করে ইতোমধ্যে ৩৭ প্রজাতির মাছের প্রজনন ও চাষাবাদ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে।

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের (নোয়াখালী-২) এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী শ ম রেজাউল বলেন বলেন, 'জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পরিলক্ষিত হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উষ্ণতা, সমুদ্রের পানির উচ্চতা এবং লবণাক্ততার বৃদ্ধির ফলে উপকূলীয় মৎস্য সম্পদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।'

এছাড়া, নদীসমূহে লবণাক্ত পানি অনুপ্রবেশের ফলে মিঠাপানির মাছ ও প্রাথমিক উৎপাদনশীলতায় পরিবর্তন ঘটছে বলে জানান তিনি। 

উষ্ণতা বৃদ্ধিতে মাছের আবাসস্থল, বিচরণক্ষেত্র ও প্রজনন প্রভাবিত হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। 

মন্ত্রী বলেন, 'মাছের অনেক আচরণগত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তিত হচ্ছে। মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে মাছের প্রজাতি বৈচিত্র্যেও।'

এছাড়া তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অনাবৃষ্টি ও অপর্যাপ্ত বৃষ্টির ফলে মাছের প্রাকৃতিক আবাসস্থল, প্রজননক্ষেত্র ও লালনক্ষেত্র হ্রাস পাচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, 'ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমান্বয়ে নীচে নেমে যাওয়ায় পুকুরের পানির স্তর কমে যাচ্ছে। পুকুরগুলো মৌসুমি পুকুরে রূপান্তরিত হচ্ছে।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Election in first half of April 2026

In his address to the nation, CA says EC will later provide detailed roadmap

4h ago