আগামী নির্বাচনে খালেদা জিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ নেই: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২টি পৃথক দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট আইনে আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, 'আইন অনুমতি দিলে তিনি (খালেদা) নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন এবং আইন যদি অনুমতি না দেয়, তাহলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। তবে আমি মনে করি, আইন অনুযায়ী তিনি আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। সংবিধানের ৬৬ (২)(ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি নৈতিক স্খলনের সঙ্গে জড়িত ফৌজদারি অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হলে সংসদ সদস্য নির্বাচনের জন্য বা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন। অথবা যিনি কমপক্ষে ২ বছরের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন, যদি না তার মুক্তির পর থেকে ৫ বছর সময় অতিবাহিত হয়।'
আজ সোমবার ঢাকার জুডিশিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে (জেএটিআই) সহকারী বিচারকদের জন্য আয়োজিত প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব বলেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, 'বিএনপি মহাসচিব দেশের অনেক আইন মেনে চলেন না, তাই তার এমন কথা বিস্ময়কর নয়।'
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ঢাকার একটি বিশেষ আদালতে ৫ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার পর ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান খালেদা। পরের বছর ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট এই মামলায় তার আপিল খারিজ করে শাস্তি বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।
এছাড়া, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর ঢাকার আরেকটি বিশেষ আদালত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে দোষী সাব্যস্ত করে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার তার কারাদণ্ড ৬ মাসের জন্য স্থগিত করার পর কারাগার থেকে মুক্তি পান খালেদা। খালেদা এখন তার গুলশানের বাসায় আছেন। গত মাসে (সেপ্টেম্বর) সরকার তার কারাদণ্ডের স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও ৬ মাসের জন্য বাড়িয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, 'সাইবার অপরাধ দমনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়েছে এবং এর অপব্যবহার বন্ধে সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। আমি অস্বীকার করিনি যে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করা হয়নি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার ও অপব্যবহার কীভাবে বন্ধ করা যায় সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি এবং গবেষণা করেছি, যা এখনো চলছে। আপনারা অবশ্যই কিছু উন্নতি লক্ষ্য করেছেন যে- কারো বিরুদ্ধে এই আইনের অধীনে মামলা দায়ের বা গ্রহণের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।'
তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার কোনো ঘটনা ঘটেনি।'
তাদের (বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকার) শাসনামলে গুম ও বিচারবহির্ভূত ঘটনা ঘটতে পারে বলে মন্তব্য করেন আনিসুল হক।
Comments