চট্টগ্রামের ডিসিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি: তথ্যমন্ত্রী

হাছান মাহমুদ
হাছান মাহমুদ। ফাইল ছবি

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, 'চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে কোনো ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।'

আজ শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়াম হলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের ডিসি মোহাম্মদ মমিনুর রহমান নিজ কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেন আবারও ক্ষমতায় আসেন, সে জন্য সবার কাছে দোয়া চান। সে সময় তিনি জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর জয় চেয়েও মোনাজাত করেন।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে কোনো তদন্ত হয়েছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'সেখানে শতশত মানুষের মধ্যে কেউ একজন মোনাজাত ধরেছে। মুসলমান হিসেবে এখানে যদি কেউ মোনাজাত ধরে আর আমি যদি এখানে মোনাজাত না ধরে দাঁড়িয়ে থাকি তাহলে তো আমাকে বলবে বিধর্মী। সেজন্য জেলা প্রশাসকও সেখানে মোনাজাত ধরেছেন।'

'মোনাজাতের মধ্যে কে কী বলল, সেটার দায় জেলা প্রশাসকের ওপর বর্তায় বলে আমি মনে করি না,' যোগ করেন তিনি।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসককে একটি শোকজ নোটিশ দেওয়া দরকার ছিল। তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া দরকার ছিল, তার বক্তব্য নেওয়া দরকার ছিল। বক্তব্য সন্তোষজনক না হলে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারত।'

তিনি আরও বলেন, 'আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে একটি মোনাজাত ও কিছু পত্রিকার সংবাদকে উপলক্ষ করে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, আমি মনে করি সেটি তড়িঘড়ি এবং যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি।'

এর আগে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে হরিজন সম্প্রদায়ের সদস্যদের প্রধানমন্ত্রীর উপহার বিতরণ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাঝে সমাজসেবা অধিদপ্তরের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী।

মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, 'কাগজে দেখলাম বিএনপি বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। আমরা দেখেছি ঢাকা শহরে তারা সমাবেশ করতে গিয়ে লাঠি ও রড নিয়ে সমাবেশে হাজির হয়েছে। আবার লাঠি ও রডের মাথায় জাতীয় পতাকাও বেঁধেছে। জাতীয় পতাকা বেঁধে তারা জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছে।'

তিনি বলেন, 'একদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব ঠাকুরগাঁও গিয়ে বলেছেন পাকিস্তান আমলই ভালো ছিল। আর ঢাকায় তারা রডের মাথায় জাতীয় পতাকা লাগিয়েছে, দুটোর মধ্যে সম্পর্ক আছে।'

তিনি আরও বলেন, 'তারা জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতি অশ্রদ্ধা ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। দুটির মধ্যে সম্পর্ক আছে।'

'বিএনপি বিভিন্ন জায়গায় বিশৃঙ্খলা করছে' উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, 'মুন্সিগঞ্জে নিজেদের কর্মীকে নিজেরা মেরেছে। তাদের এখন উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রয়োজনে নিজেদের কর্মীদের নিজেরা মেরে দেশে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালানো। সেটা যদি বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশের নামে আবারও করার অপচেষ্টা চালায় সেগুলো সরকার কঠোর হস্তে দমন করবে, জনগণও তাদের প্রতিহত করবে। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।'

Comments