রাঙ্গাবালীতে খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ, ব্যবস্থা নিতে আদালতের নির্দেশ

খালে বাঁধ তৈরি করায় পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ আছে। ছবি: স্টার

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ চর ইমারশন সরকারি খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করার কারণে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন পটুয়াখালীর একটি আদালত।

গলাচিপার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মামুনুর রহমান স্বপ্রণোদিত হয়ে মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। আদালত আগামী ১৩ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. কাইউম আকন্দ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, সরকারি খালটি দখল করে ফৌজদারি অপরাধ করেছেন বলে আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে এবং এর শাস্তি অনধিক ২ বছরের কারাদণ্ড।

ছবি: স্টার

তদন্তকালে এ অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের নাম, পরিচয় শনাক্তসহ মানচিত্র তৈরি করে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম মজুমদার জানান, তিনি আদালতের নির্দেশনা হাতে পেয়েছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চর ইমারশন গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ৮ দশমিক ২৭ একর আয়তনের ওই খালটি আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ ও প্রায় ৫০ ফুট প্রস্থ। এটি দক্ষিণ দিকে আগুনমুখা নদীতে মিশেছে। খালটির মুখে একটি স্লুইচগেট আছে তবে সেটি অকেজো। এক সময় এই খাল দিয়ে বড় বড় নৌকা চলাচল করলেও বাঁধ দিয়ে দখলের ফলে এখন পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। বাঁধ দিয়ে পুকুর তৈরি করে খালটির ২ পাড়ের কতিপয় প্রভাবশালী লোক প্রায় ১০ বছর ধরে মাছ চাষ করছেন।

এলাকার কৃষক কালাম চৌকিদার জানান, বৃষ্টি হলেই পানিতে ডুবে যায় কৃষি জমি-বাড়িঘর। জলাবদ্ধতায় চাষাবাদ ব্যাহত হয়।

অপর কৃষক মো. মাসুম জানায়, আমনের পরই শুরু হবে তরমুজ চাষের মৌসুম। তখন মিষ্টি পানির প্রয়োজন হয়। কিন্তু দখলদাররা খালের পানি ব্যবহার করতে বাধা দিয়ে থাকে। এই অবস্থায় খালের বাঁধ কেটে উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন খালের ২ পাড়ের বাসিন্দা।

স্থানীয়রা জানায়, এলাকার মনির হাওলাদারের নেতৃত্বে কয়েকজন প্রভাবশালী খালটি দখল করে মাছ চাষ করছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে মনির হাওলাদার জানান, বাড়ির সামনে তাদের জমির মধ্যে খাল পড়েছে। বাড়িতে যাতায়াতের জন্য নিজেদের জমিতে বাঁধ দিয়েছেন তিনি।

রাঙ্গাবালী উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মামুন হোসেন বলেন, চর ইমারশন খালটির ২ পাড়ে অন্তত ৮০ একর ফসলী জমি আছে। খালে অন্তত ১০টি বাঁধ আছে। পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ আছে।

রাঙ্গাবালীর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সালেক মুহিদ বলেন, কোনোভাবেই সরকারি খালে বাঁধ দিয়ে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ করা যাবে না। বাঁধ অপসারণসহ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Comments

The Daily Star  | English

US cuts tariffs on Bangladesh to 20% after talks

The deal for Dhaka was secured just hours before a midnight deadline set by President Donald Trump

2h ago