তুমব্রু সীমান্তের ওপারে আবারো মুহুর্মুহু গুলির শব্দ

বান্দরবান
তুমব্রু সীমান্তের কোনাপাড়া রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের পাশেই দেখা যাচ্ছে মিয়ানমারের সীমান্ত সড়ক। ছবি: সংগৃহীত

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তর এলাকায় আজও মুহুর্মুহু গুলি ও ভারী গোলাবারুদের শব্দ পাওয়া গেছে। শনিবার ভোর থেকে বিকাল পর্যন্ত তুমব্রু সীমান্ত এলাকার ওপারে কয়েকটি এলাকা থেকে প্রচুর গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. আলম শনিবার বিকেলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, শনিবার ভোর ৫টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের ভেতরে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। তুমব্রু সীমান্তের শূণ্যরেখার কোণাপাড়ায় যেখানে রোহিঙ্গারা আছে তার পূর্ব দিক থেকে বেশি গুলির শব্দ শোনা গেছে। মাত্র ঘণ্টাখানেক হলো গুলির শব্দ থেমেছে।

তবে সীমান্ত এলাকাজুড়ে বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্কবাস্থায় রয়েছে জানিয়ে ইউপি সদস্য মো. আলম বলেন, 'ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের এলাকা ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড বরাবর কয়েক কিলোমিটার এলাকায় সবসময় গুলির শব্দ শোনা যায়। এক দুইদিন পর দিনের যে কোনো সময় গুলির শব্দ আসে। কখনো থেমে থেমে। কখনো একটানা।'

এদিকে তুমব্রু সীমান্তের ৩৭ ও ৩৮ নম্বর সীমান্ত পিলার এলাকায় মাসখানেক ধরে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও তাদের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সঙ্গে রাখাইন রাজ্যের রাখাইন জনগোষ্ঠীর সশস্ত্র সংগঠন স্বাধীনতাকামী আরাকান আর্মির (এএ) মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। পরবর্তীতে সীমান্ত পিলার ৪০ ও ৪১ সীমান্ত পিলার এলাকায় গোলাগুলি হলে মর্টার শেল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে পড়লে তুমব্রু সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের একটি দল এখনও তুমব্রুর সীমান্তের শূণ্যরেখায় আশ্রয়শিবিরে অবস্থান করছে। সেখানে ৬২১টি পরিবারে ৪ হাজার ২৮০ জনের মতো রোহিঙ্গা আছে বলে জানান কোণাপাড়া রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের মাঝি (দলনেতা) দিল মোহাম্মদ।

বিকেলে দ্য ডেইলি স্টারকে দিল মোহাম্মদ বলেন, শনিবার বিকেল থেকে আমাদের কোণাপাড়া ক্যাম্প থেকে শুরু করে মিয়ানমার অভ্যন্তরে কয়েকটি এলাকায় আনুমানিক এক কিলোমিটারের মধ্যে অনেক গোলাগুলি চলে। দুপুর বেলা ১২টার পর থেকে বিকাল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত একটানা গুলি চলছিল। একদম সীমান্ত বরাবর হওয়ায় আমরা কোনাপাড়ার আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গারা সবসময় ভয় ও আতঙ্কে থাকি।

সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি জানতে কক্সবাজার বিজিবি ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মেহেদী হোসাইন কবিরকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।

Comments