বিভিন্ন কারণে মানুষ নিখোঁজ হতে পারে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

শাহরিয়ার
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তে বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

'বিশ্বের কোনো দেশই পরিপূর্ণ নয়' উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সরকার সব নাগরিকের জন্য ন্যায়বিচার ও অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করছে।'

তিনি বলেন, 'নিখোঁজদের খুঁজে বের করতে আমরা জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা ইতোমধ্যে জাতিসংঘের তালিকায় থাকা ৭৬ জনের মধ্যে ১০ জনের খোঁজ পেয়েছি। হয়তো বাকি ৬৬ জনের সবাইকে খুঁজে নাও পেতে পারি। তবে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।'

গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগের নিরপেক্ষ, স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্তে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের সুপারিশের প্রতিক্রিয়ায় শাহরিয়ার আলম আজ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

এসব অভিযোগের সরকারি তদন্ত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ হবে কি না, জানতে চাইলে তদন্ত এমনই হবে বলে দাবি করেন শাহরিয়ার আলম।

'বিভাগীয় তদন্ত স্বাধীন না হলে বিভিন্ন অপরাধে ৪০০ এর বেশি র‌্যাব সদস্য ও ১ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হলো কীভাবে', প্রশ্ন করেন তিনি।

'আমি বিভাগের বাইরে যাওয়ার যুক্তি দেখি না', বলেন তিনি।

তার দাবি, এই সরকারের আমলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে স্বাধীন করা হয়েছে এবং কমিশন তদন্তও করতে পারে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'জাতিসংঘ নিখোঁজ ৭৬ জনের একটি তালিকা দিয়েছে। এর মধ্যে সরকার ১০ জনকে খুঁজে বের করে জাতিসংঘে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তালিকা থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হবে। বাকি ৬৬ জনের মধ্যে অন্তত ২৮ জন অপরাধী।'

তিনি বলেন, 'বিভিন্ন কারণে মানুষ নিখোঁজ হতে পারে। কুখ্যাত অপরাধীরা সাধারণত বিচার প্রক্রিয়া এড়াতে আত্মগোপনে চলে যায়, তবে সরকার এ বিষয়ে কাজ চালিয়ে যাবে।'

প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা ভুল তথ্য ছড়াচ্ছেন এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধানের সফরকালীন সময়ে তার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন, তারা আসলে আওয়ামী লীগ বিরোধী রাজনৈতিক প্লাটফর্মকে (বিএনপি-জামায়াত) সহায়তা করছেন। এটি সরকারকে অপমান করার একটি অশুভ প্রচেষ্টা।'

তিনি বলেন, বিএনপি ও জামায়াত তাদের লোকজন নিয়ে দেশে-বিদেশে ক্রমাগত ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে।

কিছু মানুষ জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধানের আলোচনার বাইরে গিয়ে কিছু বিষয় উত্থাপন করায় প্রতিমন্ত্রী তার বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, জাতিসংঘের কার্যপ্রণালী কিভাবে চলে সে সম্পর্কেও তাদের পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই।

শাহরিয়ার বলেন, সুশীল সমাজের একটি অংশের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় ব্যাচেলেট স্পষ্ট করে বলেছেন যে বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কিত দাবিগুলো সমাধান করা তার আলোচনার বিষয়বস্তুর মধ্যে নেই।

তিনি আরও বলেন, '১৯৯৬ ও ২০০৯ সালের পর আওয়ামী লীগের শাসনামলে বাংলাদেশ জাতিসংঘের ৯টি মানবাধিকার কনভেনশনের মধ্যে ৮টি অনুমোদন করেছে, যা জনগণের প্রতি দলের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।'

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে মিশেল ব্যাচেলেটের সুপারিশের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন বিরোধী দল বিএনপিকে সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, কিন্তু তারা তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

'তাই বিএনপিকে ক্ষমতায় যেতে হলে রাজপথে নামতে হবে, জনগণের কাছে যেতে হবে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। অন্য কিছুতে কাজ হবে না,' যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus meets Chinese ambassador to review China visit, outline next steps

Both sides expressed a shared commitment to transforming discussions into actionable projects across a range of sectors

7h ago