গণতন্ত্র ও ন্যায়ের ভিত্তিতে দেশ চালাচ্ছে সরকার: আইনমন্ত্রী

সেমিনারে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। ছবি: পিআইডি

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের সবশেষ প্রতিবেদনে মানবাধিকার বা অন্যান্য বিষয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়নি। এ থেকে বোঝা যায় তার মন্তব্য অত্যন্ত 'ডিপ রুটেড এবং ওয়েল আন্ডারস্টুড'। এ ছাড়া, শেখ হাসিনা সরকার  যে গণতন্ত্র এবং ন্যায়পরায়ণতার  ভিত্তিতে দেশ চালাচ্ছে সেটাও বোঝা যায়।

আজ রোববার রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে 'বঙ্গবন্ধুর দর্শন: একুশ শতকের প্রেক্ষাপটে প্রাসঙ্গকিতা' শীর্ষক একটি সেমিনারের উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, 'চলতি বছরের মার্চ মাসে জেনেভায় মিশেল ব্যাচেলেটের সাথে সাক্ষাৎ হয়েছিল। সাক্ষাৎকালে মিশেল ব্যাচেলেটের বাংলাদেশ এবং এখানকার রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো  দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। এর প্রেক্ষিতে মিশেল ব্যাচেলেটকে বংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম।'

'এরপর চলতি মাসে হাইকমিশনার বাংলাদেশে এসেছিলেন এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো দেখে গেছেন। হাইকমিশনার যখন দেশে এসেছিলেন তখন বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা তার সঙ্গে দেখা করেছেন,  কথা বলেছেন  এবং  তিনি সবকিছু দেখে  মন্তব্য করেছেন। এ থেকে বোঝা যায় তার মন্তব্য (নেতিবাচক কোনো কিছু না আসা) অত্যন্ত ডিপ রুটেড এবং ওয়েল আন্ডারস্ট্যুড। এ ছাড়া, শেখ হাসিনা সরকার যে গণতন্ত্র এবং ইক্যুইটির (ন্যায়পরায়ণতার)  ওপর বিশ্বাস করে দেশ চালাচ্ছেন সেটাও বোঝা যায়', যোগ করেন তিনি।

বিআইআইএসএস আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, 'বঙ্গবন্ধুর সংকল্প, দূরদৃষ্টি, সাহসিকতার ফলেই পাকিস্তানি অত্যাচার-অবিচার থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, যা এখনও এ দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করছে।'   

বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতির প্রশংসা করে আইনমন্ত্রী বলেন, 'তৎকালীন দ্বিমেরু বিশ্বে জাতির পিতা সফলভাবে নিরপেক্ষতার নীতি সমুন্নত রেখেছিলেন। তার স্মরণীয় নীতি, ''সকলের প্রতি বন্ধুত্ব, কারো প্রতি শত্রুতা নয়'' বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূল ভিত্তি এবং এটি শান্তি, সহযোগিতা, উন্নয়ন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে একটি উত্তম বিশ্ব গড়ার জন্য সম্পূর্ণ উপযোগী। তার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন পররাষ্ট্রনীতিই বাংলাদেশকে কোল্ড ওয়ার থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল।'

মন্ত্রী বলেন, 'বঙ্গবন্ধু শুধু একজন নেতাই ছিলেন না, তিনি রাজনীতির দার্শনিক। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শন তাকে হত্যা করে শেষ করা যায়নি। তার আদর্শ এখনও আমাদের মধ্যে টিকে আছে। তার চিন্তা ও দর্শনে ছিল বাংলাদেশের উন্নয়ন। তিনি বাংলাদেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও দুর্নীতিমুক্ত করতে চেয়েছিলেন।'

তিনি আরও বলেন, 'গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। বাঙালি জাতীয়তাবাদের জনকও তিনি। এর প্রমাণ হচ্ছে বঙ্গবন্ধু রবীন্দ্রনাথের আমার সোনার বাংলাকে জাতীয় সংগীত হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন যা, বাঙালি জাতীয়তাবাদকে প্রতিনিধিত্ব করে। বঙ্গবন্ধু একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। গণতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্রের মিশেলে তিনি একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করতে চেয়েছিলেন।'

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলওয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিআইআইএসএসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান স্বাগত বক্তব্য দেন।

সেমিনারে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-সংস্থার কর্মকর্তা, বিদেশি দূতাবাসের প্রতিনিধি, সাবেক কূটনীতিক, সামরিক কর্মকর্তা, একাডেমিয়া, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষণা সংস্থার প্রতিনিধি, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

Comments

The Daily Star  | English

Al Bakhera killings: Water transport workers call for indefinite strike

Bangladesh Water Transport Workers Federation rejects ‘sole killer’ claim, demands arrest of real culprits, safety of all workers

30m ago