পাউবোর জমিতে আ. লীগ নেতার স্থাপনা, আদালতে বৈধতা খারিজের পরও হয়নি উচ্ছেদ

ছবি: স্টার

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় দোয়ানীতে তিস্তা ব্যারেজের কী পয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার (কেপিআই) এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা দখল করে নির্মিত আওয়ামী লীগ নেতার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয়দের মধ্যে। তবে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, উচ্ছেদ নথি তৈরির কাজ চলছে এবং শিগগিরই তা কার্যকর হবে।

স্থানীয়রা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, পাউবোর ফ্লাড বাইপাস সড়কের পাশে আওয়ামী লীগ নেতার নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বিলম্ব হচ্ছে। আদৌ এটি উচ্ছেদ হবে কি না সেটা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা। আওয়ামী লীগ নেতার অবৈধ স্থাপনা বলেই প্রশাসন তা উচ্ছেদ করতে দ্রুত কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সাধারণ মানুষ এই অবৈধ স্থাপনাটি তৈরি করলে এতদিন হয়তো উচ্ছেদ করে মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটতো। এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না হলে অন্যরাও পাউবোর জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে উৎসাহ পাবেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফ্লাড বাইপাস সড়ক সংলগ্ন ৩০ শতাংশ জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ স্থাপনাটি। সেটির নাম দেওয়া হয়েছে 'বৈরালী ফাস্টফুড চাইনিজ রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড কমিউনিটি সেন্টার'। হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল এই অবৈধ স্থাপনাটির মালিক। 

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুর রব দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল পাউবোর জায়গা দখল করে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু করেন। কাজটি বন্ধ করার জন্য ২০২১ সালের ১১ আগস্ট তাকে নোটিশ দেওয়া হয়। তিনি কাজ বন্ধ না করায় গত ২৫ আগস্ট তাকে আরও একটি নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু এতেও তিনি কাজ বন্ধ করেননি। এরপর ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলের বিরুদ্ধে হাতীবান্ধা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।'

ছবি: স্টার

আব্দুর রব আরও বলেন, 'অবৈধ দখলদার আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল তার নির্মিত অবৈধ স্থাপনার বৈধতা দাবি করে উচ্চ আদালতে একটি আবেদন করেছিলেন। কিন্তু উচ্চ আদালত চলতি মাসের ১৪ তারিখে সেটি খারিজ করে দিয়েছে।'

এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা-উদ দৌলা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অবৈধ স্থাপনাটি উচ্ছেদের জন্য লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের কাছে ২ দফা লিখিত আবেদন করা হয় ২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর এবং চলতি বছর ৬ জুন। 'জেলা প্রশাসন পরবর্তীতে হাতীবান্ধা উপজেলা প্রসাশনকে দায়িত্ব দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে কাজ করছে বলে আমাদের জানানো হয়েছে। এ ছাড়া তিনি বলেন, 'আমরা আশা করছি, খুব শিগগিরই অবৈধ স্থাপনাটির উচ্ছেদ সম্পন্ন হবে।'

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল আজ শুক্রবার সকালে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উচ্চ আদালতে তার আবেদনটি খারিজ হয়েছে কি না সেটা তিনি জানেন না। তিনি ক্রয়সূত্রে জমিতে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন।'

হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজির হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ''পাউবোর জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে 'উচ্ছেদ নথি সৃজন' করার কাজ চলছে। এজন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সার্ভেয়ারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং তারা কাজ শুরু করেছেন। আশা করছি, শিগগিরই উচ্ছেদ নথি তৈরি হবে। এরপর অবৈধ স্থাপনাটি উচ্ছেদ করা হবে।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Postgrad doctors block Shahbagh demanding stipend hike

The blockade resulted in halt of traffic movement, causing huge suffering to commuters

1h ago