হুমকি আসে, ক্লাস নিতে ভয় লাগে: শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল

ছবি: স্টার

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল বলেছেন, স্কুলে ক্লাস নিতে আমার কোন অসুবিধা নেই। তবে ক্লাস নিতে ভয় লাগে। আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে ক্লাস নিতে পারি না। ক্লাসে উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থীদের থামাতে ভয় লাগে। আবার যদি একটা কিছু করে ফেলে। কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ফোনে দুইবার হুমকি এসেছে।

বিজ্ঞান ও গণিতের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল ধর্ম অবমাননার মামলা থেকে গতকাল মঙ্গলবার অব্যাহতি পেয়েছেন। আজ বুধবার রায় প্রকাশ হয়েছে।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অনেক খুশি লাগছে। আর কোনো শিক্ষককে যেন এমন হয়রানি করা না হয়। এটা চলতে থাকলে দেশের ভবিষ্যৎ অনেক খারাপ হবে। আমার ওপর প্রায় ৫ মাস ঝড় বয়ে গেছে। আমি টিউশনি করতে পারিনি। আর্থিক অসুবিধার মধ্যে ছিলাম। রায় শোনার পর স্বস্তি লাগছে।'

তিনি বলেন, 'কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর দুইটি অপরিচিত নাম্বার থেকে হুমকি এসেছিল। থানায় জিডি করা আছে। এখন বাসা থেকে কম বের হই। খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাই না। নিজেকে ঘরবন্দী করে রাখি।

হৃদয় মণ্ডলের আইনজীবী শাহীন মোহাম্মদ আমানউল্লাহ জানান, মঙ্গলবার মুন্সিগঞ্জ আদালতে মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন হৃদয় মণ্ডল। বুধবার রায়ের কাগজপত্র পেয়েছি। পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা। তাকে অযথা হয়রানি করা হয়েছে।

মামলার বাদী বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আসাদ মিয়া বলেন, বিচারক জানতে চেয়েছেন আমার কোনো অভিযোগ আছে কি না। আমি উত্তরে বলেছি 'না'। আমার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের কথা হয়। মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ায় আমিও খুশি হয়েছি।

হাতিমারা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ ওমর চন্দ্র দাস জানান, কয়েক মাস আগে শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের মোবাইলে হুমকি আসে। ওই নম্বর নজরদারিতে আছে। শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হয়।

উল্লেখ্য, শ্রেণিকক্ষে বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে গত ২২ মার্চ মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলা করেন স্কুলের অফিস সহকারী (ইলেক্ট্রিশিয়ান) আসাদ মিয়া। তিনি গত ১০ এপ্রিল জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পান।

Comments

The Daily Star  | English

'March to Jamuna': Police charge baton to disperse JnU students

At least 25 students were taken to DMCH after suffering injuries from baton charges or falling ill due to tear gas inhalation

24m ago